‘একজন লাকী আখন্দ’ নামের এই গানটিতে রুমন ছাড়াও কণ্ঠ দিয়েছেন ফিডব্যাকের ফোয়াদ নাসের বাবু, লাবু রহমান ও লুমিন। আরও দিয়েছেন পার্থিব ব্যান্ডের রনি, পেন্টাগনের সুমন এবং একক শিল্পী সুজন আরিফ, রমা ও আর্নিক।
শেখ রানার কথায়, রুমনের সুরে গানটির সংগীতায়োজন করেছেন ফোয়াদ নাসের বাবু।
গানটির উদ্যোক্তা আশফাকুল বারী রুমন জানান, গত দুইদিন ধরে রেকর্ডিং ও ভিডিও ধারণের কাজ চলছে ফোয়াদ নাসের বাবুর স্টুডিওতে।
লাকী আখন্দের সৃষ্টি কিছু গানের রেশ ধরে লেখা হয়েছে গানটি। কথাগুলো এমন—
আবার কোনও সন্ধ্যা হাওয়ায় দুজন
অজানাতে ঘুরে আসার সুরে
ভালোবাসার সহস্র সব কথালাকী আখন্দ
পিয়ানোতে বাঁধছে ঘুরে ঘুরে।
নীল মণিহার তোমার জন্য বন্ধু
স্বর্ণালি দিন, মনে রাখার দুপুর
স্বাধীনতার গান, বেঁধেছ মনে
বাংলাদেশের বৃষ্টি আকাশ উপুড়।।
প্রহরগুলো কবিতাতে আঁকা
রাতের আছে নীরবতা, ছায়া
একটা মানুষ, সুর ধরছে একা
অলক্ষ্যে তার অপরূপ মায়া।
নীল মণিহার তোমার জন্য বন্ধু
স্বর্ণালি দিন, মনে রাখার দুপুর
স্বাধীনতার গান, বেঁধেছ মনে
বাংলাদেশের বৃষ্টি আকাশ উপুড়।।
কিংবা ধরো, মামনিয়ার খুশি
ছুঁয়ে গেল সবার হৃদয় কোণে
লাকী আখন্দ, সেই মানুষের নাম
সুরের খেয়ায় আনন্দ বিজনে।
নীল মণিহার তোমার জন্য বন্ধু
স্বর্ণালি দিন, মনে রাখার দুপুর
স্বাধীনতার গান, বেঁধেছ মনে
বাংলাদেশের বৃষ্টি আকাশ উপুড়।।
গানটি তৈরি প্রসঙ্গে রুমন বাংলা ট্রিবিউনের কাছে বলেন, ‘আসলে লাকী ভাইয়ের প্রতি আমাদের প্রেম কিংবা সম্মানের বিষয়টিও তো নতুন করে প্রকাশের কিছু নেই। তাঁদের গড়ে দেওয়া পথটাতেই আমরা হাঁটছি। আফসোস শুধু এটুকু, এই গানটি লাকী ভাই শুনে যেতে পারেননি।’
রুমন জানান, ২০১৭ সালে লাকী আখন্দ যখন বেশ অসুস্থ তখন গীতিকার শেখ রানা গানের লাইনগুলো ফেসবুকে পোস্ট করেন। সেটি দেখে গান তৈরির আগ্রহ দেখান রুমন। সুরও করেন। একদিন লাকী আখন্দকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে গানটি প্রসঙ্গে বলেও আসেন। যদিও গানটি পূর্ণ প্রাণ পাওয়ার আগেই বিদায় নেন লাকী আখন্দ।
এদিকে গানটি প্রসঙ্গে এর অন্যতম শিল্পী সুজন আরিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লাকী ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের একটা সুযোগ পেলাম এই গানটির অংশ হয়ে। গানটিতে কণ্ঠ দিতে হবে—এমন প্রস্তাব পাওয়ার পর আমরা প্রত্যেকেই বিনাবাক্যে ছুটে যাই। অসাধারণ একটা কাজ হয়েছে। সিনিয়রদের প্রতি আমাদের এই শ্রদ্ধা আর মমত্ববোধ বেঁচে থাক।’
লাকী আখন্দ আধুনিক বাংলা সংগীতের খ্যাতিমান শিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। তাঁর জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৮ জুন। ৫ বছর বয়সেই তিনি তার বাবার কাছ থেকে সংগীত বিষয়ে হাতেখড়ি নেন। শৈশব কেটেছে ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার পাতলা খান লেনে। মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে এইচএমভি পাকিস্তানে সুরকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। সুরকার হিসেবে আরও কাজ করেছেন এইচএমভি ভারত এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রেও।
লাকী আখন্দের উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে—‘এই নীল মণিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘মামনিয়া, ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’, ‘লিখতে পারি না কোনও গান’, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’ প্রভৃতি।