সে হিসেবে নতুন বছর বঙ্গাব্দ ১৪২৬ হাজির হবে খুব নীরবে।
৩১ মার্চ সকালে এমন সিদ্ধান্ত প্রথমে আসে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। তিনি সংশ্লিষ্টদের জনসমাগম না করে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় এবারের উৎসবটি পালনের নির্দেশ দেন। পরে ছায়ানট থেকেও এবারের আয়োজন স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গানের মাধ্যমে মানুষকে সত্যিকারের মানুষ হওয়ার জন্য সাধনা করে ছায়ানট। করোনাভাইরাসের কারণে দেশের প্রতিটি মানুষ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আমাদের সংস্কৃতিকর্মীদেরও নিরাপত্তার প্রশ্ন আছে। সব মিলিয়ে রমনা বটমূলে এবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠানটি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’
তাহলে কি ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় কোনও আনুষ্ঠানিকতা থাকছে বটমূলে কিংবা অন্য কোথাও?
জবাবে ছায়ানটের এই কর্তা বলেন, ‘দেখুন এরকম একটি পরিকল্পনা শুরুতে ছিল। মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এটি নিয়ে আলাপ হয়েছে আমাদের খায়রুল আনাম শাকিল সাহেবের সঙ্গে। পরে আমরা বিবেচনা করে দেখলাম, সেটিও এখন আর সম্ভব নয়। আমাদের এই অনুষ্ঠানে দেড়শ শিল্পী গান করে থাকেন। এখন তাদের সবাইকে ডেকে এক করে আনাটাও ঠিক হবে না। ফলে অনুষ্ঠান রেকর্ড করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেটি প্রচার করারও সুযোগ নেই।’
তবে একটা সুযোগ এখনও আছে বলে মনে করেন সারওয়ার আলী। জানান, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের বাজেট দিয়ে তারা ত্রাণ দেবেন দুস্থদের মাঝে। আরও জানান, এ বিষয়ে আমরা আজই (১ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্তটি জানাবো গণমাধ্যমে।
রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের প্রভাতি আয়োজন শুরু ১৯৬৭ সাল থেকে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বছরটি বাদে নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীবাসীর পহেলা বৈশাখ উদযাপনের প্রধান এ উৎসবটি।
পহেলা বৈশাখে (১৪ এপ্রিল) রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতি আয়োজন ছাড়াও বড় চমক হয়ে ধরা দেয় চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা। জানা গেছে, এটিও এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। শুধু ঢাকার এই দুটি প্রধান আয়োজনই নয়, এবার দেশের কোথাও বর্ষবরণের অনুষ্ঠান বা বৈশাখী মেলার অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।