মেকআপ, গেটআপ, শুটিং, অনুষ্ঠান, ভক্তদের সেলফি, ব্যক্তিগত নানা বিষয়, সোশ্যাল মিডিয়া আর গণমাধ্যম হ্যান্ডেল—এসব সামাল দিতেই একজন তারকাদের উদয়-অস্ত ফুরায়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পলকেই বদলে গেল তারকাদের নিয়মিত সেই বুলেট জীবন।
বিশ্বের সিংহভাগ তারকাই অতিক্রম করছেন সেলফ হোম কোয়ারেন্টিন। যার শেষ কবে, নিশ্চিত নন কেউই। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত একজন নির্মাতা ছাড়া দেশের সব শিল্পী ও কুশলী করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদে আছেন।
নিরাপদে আছেন দুই বাংলার প্রভাবশালী অভিনেত্রী জয়া আহসানও। কলকাতায় নয়, লকডাউনের আগেই নিরাপদে ফিরেছেন ঢাকার ইস্কাটনে। তিন সপ্তাহের ওপরে মা রেহানা মাসউদ আর একমাত্র বোন কান্তাকে নিয়ে ভালোই সময় কাটছে তার। তবু প্রশ্ন করা যায়, এই যে বুলেট বেগে দুই বাংলায় ছুটে চলা ‘দেবী’র শুটিংহীন সময়গুলো কাটে কেমন করে? কাটে তো, নাকি আটকে থাকে!
জয়াপ্রিয় বেশিরভাগ মানুষই জানেন, রেহানা মাসউদের সংসারে দুই মেয়ে এক ছেলে। দুই বোন জয়া ও কান্তা, তাদের একমাত্র ভাই অদিত। এই নিয়েই পরিপাটি মাসউদ পরিবার। অথচ এই করোনাকালে এসে জয়ার তথ্য খানিক গোলমেলে! বলছেন ছোটবোন ক্লিও। আবার বলছেন বাইরের বাচ্চাগুলো! তবে কি চলমান অসময়ে দাঁড়িয়ে ব্যক্তিজীবনে আর কোনও আড়াল রাখতে চাইছেন না এই ‘কণ্ঠ’-নেত্রী!
এতক্ষণে স্পষ্ট হলো, তাদের পোষা কুকুর ক্লিওপেট্রার কথা বলছেন জয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত নানা সময়ের পারিবারিক ছবি থেকেও জয়ার কথাগুলোর প্রমাণ মেলে। ক্লিও মাসউদ পরিবারের বড় অংশজুড়েই আছে। কিন্তু বাইরের বাচ্চাগুলো? তবে কী এরমধ্যে ঢাকার বাইরে কলকাতা শহরে জয়ার সংসার-স্বামী-বাচ্চাকাচ্চা...! যেভাবে আসা-যাওয়া, হতেও পারে।
এ বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করা ঠিক হবে কি হবে না, এমন ভাবনার মাঝেই কথায় কথায় জানা গেল বাচ্চাগুলোর বিষয়ে। কলকাতায় এ জাতীয় কিছুই নেই তার, একাই একশ হয়ে ভালো আছেন তিনি। তবে অলিখিত এই লকডাউন শহরে (ঢাকা) অবহেলিত ক্ষুধার্ত কুকুরগুলোকে ঠিক নিজের বাচ্চার মতোই দেখছেন জয়া আহসান। তার ভাষায়, এগুলো হচ্ছে তার বাইরের সন্তান। সম্প্রতি এই সন্তানদের খাওয়ার দায়িত্ব নিয়ে বেশ আলোচনায় এসেছেন তিনি। হয়েছেন প্রশংসিত।
জানা গেছে, এখনও সেই খাবার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রোজ সকাল ৭টায় বাচ্চাদের জন্য রান্না চাপান চুলোয়। ভাত আর মুরগির ঝোল। মেন্যুতে মাছও থাকে মাঝে মাঝে। গেল ২০ দিন এই কাজটি তিনি নিজ হাতে নিয়মিত করছেন। প্রথম দুই সপ্তাহ নিজেই খাবারের ব্যাগ নিয়ে ছুটেছেন রাস্তা রাস্তায়। ১১ এপ্রিল থেকে এই খাবার রান্না করে দিচ্ছেন ভলান্টিয়ারদের হাতে। রোজ দুপুরে তারাই জয়ার বাচ্চাদের খাবার পৌঁছে দিচ্ছে নিয়মিত।
এ বিষয়ে জয়া সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন। তাও ঠিক, তিনি তার সন্তানদের কী খাওয়াবেন, কেন খাওয়াবেন, সেসব তো অন্যদের বলার কিছু নেই।
জয়া জানান, এই তিন সপ্তাহে হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে ভাইরাস প্রতিরোধে যতটা সচেতন হয়েছেন তা সারা জীবনেও করা হয়নি। ঘরে থেকেও এখন তিনি সকাল-সন্ধ্যা দুইবার স্নান করেন। জয়ার ভাষায়, ‘সারা দিন ধুতে ধুতে হাতের ছাল-বাকল তুলে ফেলেছি। করোনা আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে বটে!’