স্মৃতির ডালা খুলে বসেছেন শিল্পীরা। এরমধ্যে একেবারে আলাদা কিছু তথ্য দিলেন এই প্রজন্মের অন্যতম শিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। স্মৃতি হাতড়ে তিনি জানান এন্ড্রু কিশোরের রান্নার খবর। আফসোস করেই বলেন, ‘দাদার হাতের মজার রান্না আর খাওয়া হবে না।’
লিজার ভাষ্যে, ‘২০১১ সালে আমেরিকায় ট্যুর করি আমরা। টানা দেড় মাসের ট্যুর ছিল। সেই সুবাদে দাদার সঙ্গে বসে রোজ সকালে রেওয়াজ করা ছিল আমাদের রুটিন। এর বাইরে দাদা আর আমি একসাথে মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে ছোট্ট একটা বাগান করেছিলাম সেখানকার আয়োজক মনির ভাইয়ের বাসার পেছনের উঠোনে। সেই বাসাতেই আমরা সব শিল্পী থাকতাম। তো আমার তেমন গাছ লাগানোর অভিজ্ঞতা ছিল না। আমি ছিলাম দাদার হেল্পিং হ্যান্ড। আমি দেখতাম, দাদা কত যত্ন করে ধীরে ধীরে ছোট একটা বাগান করে ফেললেন! দেখলাম অল্প কয়েকদিনেই দাদার হাতে লাগানো গাছে টমেটো, লাউ আর শসা ধরেছে! এসব দেখে দাদা আর আমার সে কী আনন্দ! তারপর সেই বাগানের সবজি দাদা নিজেই তুললেন। নিজ হাতে মাছ দিয়ে রান্না করলেন। আমরা সবাই খুব মজা করে খেলাম।’
লিজা আরও বলেন, ‘এতবড় মাপের একজন সংগীতশিল্পীর সাথে আমেরিকার এক স্টেট থেকে আরেক স্টেটে পাড়ি দিয়েছি, একই স্টেজ শেয়ার করেছি, একসঙ্গে দ্বৈতগান গেয়েছি। একবারের জন্যেও মনে হয়নি, তাঁর উচ্চতা পাহাড় সমান আর আমি বালুকণা। তিনি আমাদের কাউকে বুঝতেই দেননি তার ওজন। কী সহজ-সরল ব্যবহার, অথচ আমরা তখন এই ইন্ডাস্ট্রির শিশু।’
লিজা জানান, এন্ড্রু কিশোরের সঙ্গে তার এমন আরও অনেক স্মৃতি রয়েছে স্টেজ শো’র সুবাদে। যদিও সেসব এখন অতীত। আফসোসের সুরে বলেন, ‘এমন অনেক স্মৃতিই মনে পড়ে যাচ্ছে আজ। বারবার মনে হচ্ছে, আর বুঝি আপনার সাথে বাগান করা হলো না। আপনার হাতের মজার রান্না খাওয়া হবে না। সেই গানের আড্ডা, ভুল করলে শুধরে দেওয়া- খুব মিস করবো। দাদা, আপনার জন্য দোয়া।’
ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৫৯ মিনিটে রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এন্ড্রু কিশোর।