ছবিটির শুটিং শুরু হলো আজ (৩ অক্টোবর) থেকে। যদিও শুটিং বহরে বাপ্পী চৌধুরী অংশ নিচ্ছেন ৭ অক্টোবর থেকে। এদিকে ছবিটির নাম নিয়ে এরমধ্যে পাঠকমনে তৈরি হয়েছে কৌতূহল। নেটিজেনদের প্রশ্ন, কেন এমন নাম! কিংবা নামকরণের পেছনে রহস্য কী?
উত্তরে জানা গেল মর্মস্পর্শী এক ঘটনা।
বাপ্পী চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সত্যি বলতে আমরা তো সবাই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার কথা জানি। কিন্তু হত্যার পর আসলে কী কী ঘটলো- সেসব বিষয় বিস্তারিত জানা ছিলো না। আমার ধারণা দেশের বেশিরভাগ মানুষই জানেন না, জাতির পিতাকে খুন করার পর কয়েক ঘণ্টা আসলে কী হয়েছিল। কেমন করে ঢাকার ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে মরদেহ টুঙ্গিপাড়া গেল। কোন প্রক্রিয়ায় দাফন করা হলো। এই ছবিটির মাধ্যমে সেই বাস্তব ঘটনাগুলো উঠে আসবে।’
ছবিটির নাম কেন ‘৫৭০’-এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাপ্পী চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই নামটির পেছনে রয়েছে অনেক বেদনার একটি ঘটনা। ছবিতে দেখা যাবে, হেলিকপ্টারে করে বঙ্গবন্ধুর মরদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় অন্য সেনা সদস্যদের সঙ্গে আমিও ছিলাম। টুঙ্গিপাড়া নামার পর সেনা সদর দফতর থেকে ক্ষণে ক্ষণে প্রেশার আসছিলো, দ্রুত দাফন করার জন্য। টাইম বেঁধে দেওয়া হয় সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা। মানে বিষয়টি এমন, বঙ্গবন্ধুকে গোসল করানোর দরকার নেই, দ্রুত দাফন করে ফেলো! তবুও আমরা গোসল করানোর উদ্যোগ নিই। কারণ, রক্তাক্ত বঙ্গবন্ধুকে এভাবে দাফন করতে চাইনি আমরা। হুজুর ডাকা হলো। তিনি বললেন, সাবান ছাড়া তো গোসল সম্ভব নয়। ওদিকে ঢাকা থেকে প্রেশার আসছিলো- দ্রুত করার জন্য। এরপর আমি আমার বড় অফিসারকে অনুরোধ করে এক পিচ্চিকে দিয়ে সাবান কেনার ব্যবস্থা করি। ছেলেটা নিয়ে আসে তখনকার এক টুকরো কাপড় কাচা সাবান। সাবানটির নাম- ৫৭০। সেই সাবান দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে গোসল করানো হয়। ছবিটির নাম মূলত এখান থেকেই। যদিও ছবিটির প্রেক্ষাপট আরও গভীরে।’
বাপ্পী চৌধুরী জানান, পুরো ছবির গল্পটি তিনি নির্মাতার কাছে শুনেছেন প্রায় চার ঘণ্টা সময় নিয়ে। যেটি শুনে তিনি কেঁদেছেন অঝোরে। তার ভাষ্যে, ‘ঘটনাগুলো আসলে সহ্য করার মতো নয়। এবং এই ছবিটির প্রতিটি চরিত্র ও বর্ণনা মূল ঘটনা অবলম্বনে তৈরি। যার পুরোটা বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে অনাপত্তিপত্র নেওয়া হয়েছে।’
নির্মাতা আশরাফ শিশির জানান, ১৯৯৬ সালে দায়েরকৃত বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্তকে ভিত্তি করে এর চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন। যেখানে নির্মোহভাবে তুলে ধরা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টায় কী কী ঘটেছিলো, সেই দৃশ্যপট।
চলচ্চিত্রটি বাস্তবায়নে নির্মাতার সঙ্গী হয়েছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিনেবাজ ফিল্মস।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ দিনটিকে ধরা হয় সবচেয়ে বেদনার।