১৯৯৩ সালে ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটক দিয়েই আমার টেলিভিশনে অভিষেক হয়। তবে থিয়েটার করার কারণে আবদুল কাদের ভাইয়ের সঙ্গে আগে থেকেই চেনা-জানা।
তখন সময়টা অন্যরকম ছিল। থিয়েটারে কেউ কাজ করলেই অন্য সব দলের সদস্যদের সঙ্গে উঠবস হতো। আবদুল কাদের ছিলেন সেই সূত্রে আমার বড় ভাই। প্রচণ্ড প্রাণশক্তিতে ভরপুর একজন মানুষ। একটা উদাহরণ দিলে আরও বোঝা যাবে। সেটা হলো সাজু খাদেম। তাকে এখন যেমন দর্শকরা খুব হাসিখুশি ও আড্ডাবাজ হিসেবে দেখতে পান, তেমনই ছিলেন কাদের ভাই। তিনি কোথাও হাজির মানে পুরো মজলিস তার কব্জায়। সারাক্ষণ মাতিয়ে রাখতেন।
‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকেও কিন্তু তার অভিনয়টা দর্শকরা বেশ উপভোগ করতেন। তিনিও উপভোগ করতেন। কারণ এই নাটকে কাদের ভাইয়ের যে ট্রেডমার্ক অভিনয়, সেটা থেকে তিনি বের হয়ে এসেছিলেন। রিহার্সালে নানারকম প্রপস ব্যবহার করতেন। যেন চরিত্রটা আরও প্রাণবন্ত হয়।
কিন্তু সেখানেও তার নানারকম হাসির কাণ্ড থাকত। একটা মজার ঘটনা বলি। শেষ পর্বে কাদের ভাই মানে বদি আমাদের (বাকের ভাই) বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবেন। শুটিংয়ে হঠাৎ তিনি দাড়ি নিয়ে হাজির! আমি কইলাম, ‘এটা কী করলেন? মুখে দাড়ি!’
বললেন, ‘কাউরে কইয়ো না। জনগণের মাইর একটাও মাটিতে পাড়বে না। শুটিং শেষ করে মুখে দাড়ি লাগয়ে ভাগবো।’
সত্যি বলতে, তিনি প্রচণ্ড আমুদে মানুষ ছিলেন। যদি আমি চোখ বন্ধ করে কাদের ভাইকে ভাবি, তাহলে কখনও তার মলিন মুখ চোখে আসবে না। কারণ তিনি সবসময় হাসতেন।
আমার বড় ভাইয়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
অনুলিখন: ওয়ালিউল বিশ্বাস