বহুমাত্রিক ব্যস্ততায় ছন্দময় টিনা রাসেল

চলমান মহামারিকে সমীহ করে প্রায় এক বছর ঘরবন্দি বা নিউ নরমাল সময় পার করছে বাংলাদেশ। তবে এরমধ্যে উদ্যমী কিছু মানুষ থমকে নেই, উল্টো নিজেকে এক্সপ্লোর করেছেন নানা মাধ্যমে।

যাদের মধ্যে অন্যতম কণ্ঠশিল্পী-সঞ্চালক-উদ্যোক্তা টিনা রাসেল। বলতে গেলে এই করোনাকালেই টিনা রাসেল নিজেকে তুলে ধরেছেন নানাভাবে। বছর (২০২০) শেষ করেছেন ‌‌‘চোখের ভেতর’ গান প্রকাশ করে। আর শুরুটা (২০২১) করলেন গত ভ্যালেন্টাইন উৎসবে আরও জমকালো আয়োজনে- মুম্বাইয়ে চিত্রায়িত ‘পারবো না’ গান দিয়ে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকবি জুলফিকার রাসেলের অনবদ্য কথায় দুটো গানচিত্রের করতলধ্বনি না থামতেই এবার দিলেন নতুন খবর। দুই বাংলার প্রভাবশালী সংগীতশিল্পী নচিকেতার সুরে গাইলেন টিনা রাসেল। চলছে ভিডিও নির্মাণের প্রস্তুতি। উন্মুক্ত হবে জুটি মিউজিকের ইউটিউব চ্যানেলে।

টিনা রাসেলটিনা রাসেল বলেন, ‘আমি তাড়াহুড়োর মধ্যে ছিলাম না কখনও। এখন আর স্থির। আমি চাই শুদ্ধ বাংলা গানের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে। ফলে গানের কথা-সুর আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গেলো এক বছর আমি যে ক’টি গান প্রকাশ করেছি, তার প্রত্যেকটি অনেক গবেষণা ও শ্রমের ফসল। যেগুলোর বিপরীতে আমি কখনোই ভাইরাল হতে চাইনি, ঘরে বসে ভিউ গুনিনি। আমি খুঁজেছি গান শুনে মানুষের ভেতরে প্রশান্তি তৈরির খবর। এবং সেটা আমি পেয়েছি।’

সম্ভবত তারই প্রতিধ্বনি মিললো ‘ঐক্য-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস’-এর শেষ আসরে। যে মঞ্চ থেকে সেরা দ্বৈতগানের স্বীকৃতি পেলেন তাহসান ও টিনা রাসেল। জুলফিকার রাসেলের কথায় প্রশংসিত এই গানটির শিরোনাম ‘শেষ দিন’।

এত গেল গানের খবর। একই সময়ে টিনা রাসেল নিজেকে অন্যভাবে উপস্থাপন করছেন সঞ্চালক হিসেবে, নাগরিক টিভির জনপ্রিয় শো ‘গানবাক্স’তে। চলমান লকডাউনে সরব রয়েছেন ফেসবুক লাইভ ও ইউটিউব টিউটোরিয়ালে।

তবে গানের বাইরে টিনা রাসেল ফ্যাশন সচেতনদের বাড়তি নজর কেড়েছেন নিজ নামে অনলাইন আউটফিট শপ পরিচালনা করে। যেখানে মূলত বিশ্বের নামজাদা সব ব্র্যান্ডের ওয়েস্টার্ন পোশাক শোভা পায়।

টিনা রাসেল জানান, ওয়েস্টার্ন দিয়ে শুরু করলেও এবার তার শপ-এ থাকছে দেশি কটনের পোশাকও। যে পোশাকগুলোর ডিজাইন তিনি নিজেই করছেন।

টিনা রাসেলএই স্থবির সময়ে বহুমাত্রিক কার্যক্রম নিয়ে সমান্তরাল এগিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে টিনা রাসেল বলেন, ‘গানের ক্যারিয়ার সংকটে পড়ে গেলো- এই ভেবে আমি উপস্থাপনা বা ব্যবসা পরিচালনা করি না। আমি আপাদমস্তক গানের মানুষ, গানটা শিখে এসেছি। ফলে শেষ পর্যন্ত গানের সঙ্গেই থাকতে চাই। কিন্তু সময়টাও নষ্ট করতে চাই না আমি। যেহেতু শো বন্ধ। গানের বাইরে হাতে প্রচুর সময়। তাই শখে উপস্থাপনা আর ব্যবসাটা করি।’

শেষে এটুকু মনে করিয়ে দিতেও ভুললেন না টিনা রাসেল; উপস্থাপনা-ব্যবসা সময় কাটানো শখ হলেও গানের মতোই এ দুটি বিষয়ে তিনি সমান সচেতন ও সিরিয়াস। কারণ, জীবনের প্রতিটি উদ্যোগেই তিনি খুঁজতে শিখেছেন ছন্দ।

এই মহামারিতে টিনার প্রত্যাশা, ‘পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের জীবন হোক ছন্দময়।’