অবশেষে পাওয়া গেল নির্মাতা সাদকে

বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর কান-এর অফিসিয়াল সিলেকশনে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আর সেটি সম্ভব হয়েছে নির্মাতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে।

৩ জুন কান উৎসব কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে এটা জানা যায়।

আর এরপর থেকেই খুশির জোয়ারে ভাসছে সিনেমাপ্রেমীরা। তবে এমন উচ্ছ্বাসভরা খবরেও নাগাল পাওয়া যায়নি নির্মাতা সাদের। কথা বলেননি দেশের কোনও গণমাধ্যমের সঙ্গে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাদ প্রচারবিমুখ, তাই সামনে আসছেন না; বরং সুযোগ দিচ্ছেন টিমমেটদের! তবে সেটি ভুল প্রমাণ করে ঠিকই তিনি কথা বললেন। যদিও দেশে নয়, বিদেশি গণমাধ্যমে।

মার্কিন বিনোদনভিত্তিক জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ভ্যারাইটিকে আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ সাদ জানিয়েছেন কাজটির অনুপ্রেরণার কথা। বলেন, ‘আমি একটি বড় পরিবার ও তিন বোনের সাথে বেড়ে উঠেছি। আমার চিন্তা-প্রক্রিয়ায় তাদের গভীর প্রভাব রয়েছে। আমার বিশ্বাস, সেই প্রভাব থেকেই রেহানার জন্ম।’

তিনি মনে করেন, এই চরিত্রটিকে তিনি অনেক দিন ধরেই নিজের মধ্যে গড়ে তুলেছেন। যুক্তি ও আবেগের দ্বন্দ্বে আটকা পড়া এই জটিল নারীর চিন্তাকাঠামোই রেহানা মরিয়ম নূর। যার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন।

বাংলাদেশের জন্য প্রশংসা বয়ে আনা এই নির্মাতা আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটা আমাকে আকৃষ্ট করেছে, তা হলো তার চরিত্রটি পরস্পর বিরোধিতায় পূর্ণ। কী সে চায়, আর কেনই বা চায়, এটা বুঝতে তার নিজেরই অনেক চেষ্টা করতে হয়েছে, এমন এক দমবন্ধ করা জগতে সে থাকে, যা বারবার তাকে ঠেলে দেয় চূড়ান্ত সীমার দিকে।’

বেসরকারি মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করেই এর গল্প। যেখানে রেহানা একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক হিসেবে জটিল জীবনযাপন করেন। এরমধ্যে এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বেরোনোর সময় একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হন রেহানা।

রেহানা মরিয়ম নূর-এর একটি স্থিরচিত্রএরপর থেকে তিনি এক ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করেন এবং ক্রমশ একরোখা হয়ে ওঠেন। কিন্তু একই সময়ে তার ৬ বছর বয়সী মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে রূঢ় আচরণের অভিযোগ করা হয়। এমন অবস্থায় অনড় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রী ও তার সন্তানের জন্য ন্যায়বিচারের খোঁজ করতে থাকেন।

পোটোকল ও মেট্রো ভিডিও’র ব্যানারে ছবিটি প্রযোজনা করেছেন সিঙ্গাপুরের প্রযোজক জেরেমি চুয়া, নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু এবং সহ-প্রযোজনা করেছেন রাজীব মহাজন, আদনান হাবিব ও সাঈদুল হক খন্দকার।

ছবিতে বাঁধন ছাড়াও অভিনয় করেছেন আফিয়া জাহিন জাইমা, কাজী সামি হাসান, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, ইয়াছির আল হক, সাবেরী আলমসহ অনেকে।

‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সাদের দ্বিতীয় সিনেমা। এর আগে ২০১৬ সালে ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ শিরোনামে একটি সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন তিনি।

সূত্র: ভ্যারাইটি

* অবশেষে কান অফিসিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশের ছবি!