প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবারকে ধরা হয় বাবা দিবস। সেই হিসাবে আজ, ২০ জুন বিশ্ব বাবা দিবস। বিশেষ এই দিবসে বাংলা ট্রিবিউন জানতে চেয়েছে বাবাকে নিয়ে কয়েকজন তারকার মনের কথা। এখানে উল্লেখ থাকলো অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার অনুভূতি—
আশপাশের কেউ কারও প্রসঙ্গে কিছু বললেই তিনি আমাদের দিয়ে সেটা বিচার করতেন। কয়েকটি উদাহরণ দেই।
কাউকে কেউ সুন্দর বললে আমার বাবা কম্পেয়ার করতো তার মেয়েদের মতো সুন্দর কিনা? যেমন কেউ লম্বা হলে বাবা বলতেন, আমার মেয়েদের মতো উচ্চতা!
আমি সব সময়ই বাবা-মায়ের বাধ্য মেয়ে ছিলাম।
শুধু একটা জায়গায় তা হয়নি। চিকিৎসক বাবা সব সময়ই চাইতেন আমি বাবার পেশাতে যাই। তাই আমার পেশার প্রতি বাবার ভালো লাগাটা নিজের মধ্যেই রাখতেন।
একবার আমরা গোটা পরিবার মালয়েশিয়া যাচ্ছিলাম। ইমিগ্রেশন পুলিশ অফিসার বেশ আগ্রহ সহকারে বাবার সঙ্গে কথা বললেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কি শবনম ফারিয়ার বাবা? তিনি কি শুটিংয়ের জন্য যাচ্ছেন?’
টের পেলাম, বাবার মনটা তখন অন্যরকম ভালো লাগায় ভরে গেল। তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন যে তার পরিচয়ে নয়, মেয়ের পরিচয়ে তাকে কেউ চিনলো! বাবার এই খুশি হওয়াটা আমার অভিনয় জীবনের অন্যতম প্রাপ্তি!
মেয়েদের বাবা না থাকলে জীবনের হিসাবগুলো একটু কঠিন হয়ে যায় (১৬ জুলাই, ২০১৭ সালে মারা যান)। তা সেটা যতই প্রতিষ্ঠিত হোক আর যত টাকাই ইনকাম করুক!
মা গল্প বলছিল, বাবা বাসার বাইরে থাকলে নাকি আমি খাওয়ার সময় খুব বিরক্ত করতাম! খেতে চাইতাম না।
বাবা খুব সুন্দর আবৃত্তি করতেন, তাই বাবার কবিতা ক্যাসেটে রেকর্ড করা থাকতো। বাবা না থাকলে আমাকে সেটা শুনিয়ে খাওয়ানো হতো!
আর সেই আমি, আজ প্রায় ৪ বছর ধরে বাবার কণ্ঠটা শুনতে পাই না!
আমি জানি, সবাই চলে যাবে, এটাই নিয়ম, কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয় আল্লাহ কিছু নিয়ম না করলেও পারতো! বাবা-মা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় নেয়ামত, এত বড় নেয়ামত সরিয়ে না নিলেই কি হতো না?
আজ (২০ জুন) বাবা দিবস। গত চার বছর ধরে বাবাকে কী দেবো ভাবতে হয় না! কিন্তু অদ্ভুত একটা ‘কী জানি নাই’ অনুভূতি সব সময় ঘিরে থাকে!
অনুলিখন: ওয়ালিউল বিশ্বাস