কোভিড পজিটিভ

ফকির আলমগীরের অক্সিজেনে উন্নতি, রক্তে ইনফেকশন

কোভিড পজিটিভ হয়ে সবকিছু দ্রুত ঘটলো গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীরের জীবনে। এক সপ্তাহের মধ্যে বাসা থেকে আইসিইউ, এরপর ভেন্টিলেশন সাপোর্ট।

তবে ২৩ জুলাই দুপুরে এই নন্দিত শিল্পীর পুত্র মাশুক আলমগীর রাজীব বাংলা ট্রিবিউনকে জানান খানিক স্বস্তি বার্তা। বলেন, ‘বাবার অবস্থা এখন আগের চেয়ে ভালো। অক্সিজেন স্যাচুরেশন শতভাগ। বিশেষ করে ডান ফুসফুস সংক্রমণমুক্ত। তবে বাম ফুসফুস এখনও ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। ফলে ডানপাশে কাত হলেও অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৭৫-এ নেমে আসে। তবে চিকিৎসকরা প্রতিনিয়ত দৃষ্টি রাখছেন বাবার ওপর।’
  
মাশুক চিকিৎসকের আলাপ থেকে একটি শঙ্কার কথাও জানালেন। বললেন, ‘বাবার শরীরে ডি-ডাইমার ক্রমশ বাড়তে থাকলেও শুক্রবার সকাল থেকে সেটি কমতির দিকে। এটা একটা পজিটিভ। তবে নতুন করে রক্তে ইনফেকশন পাওয়া গেছে। ব্লাড প্রেসার লো। আজ থেকে নতুন অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া শুরু হচ্ছে। এটি না কাজ করলে খুবই বিপদ হয়ে যাবে।’

এদিকে প্রথম দিন থেকে হাসপাতালে থেকে ফকির আলমগীরের শরীরের সব আপডেট মিডিয়াকে দিয়ে আসছিলেন মাশুক। তবে শুক্রবার দুপুরে জানালেন নতুন দুশ্চিন্তার কথা। কারণ, এদিন সকাল থেকে তার গলাব্যথা ও কাশি দেখা দিয়েছে! বললেন, ‘চিন্তা তো আমার জন্য নয়। প্রথম চিন্তা ছিল বাবার জন্য। এখন চিন্তা করছি আমার ৫ মাসের বাচ্চাটার জন্য। সবার দোয়া চাই।’  

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৫ জুলাই মধ্যরাত থেকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন ফকির আলমগীর। ১৮ জুলাই চিকিৎসকেরা তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে নিয়েছেন। 

জানা গেছে, ১৪ জুলাই ফকির আলমগীরের করোনাভাইরাস পজিটিভ ফল আসে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।

ফকির আলমগীর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম শিল্পী। তারও আগে থেকে তিনি শ্রমজীবী মানুষের জন্য গণসংগীত করে আসছিলেন। স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রেখেছেন ফকির আলমগীর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এরমধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। 

১৯৮২ সালের বিটিভির ‘আনন্দমেলা’ অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পর দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলে। কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গানটির সুরও করেছেন ফকির আলমগীর। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা, গণসংগীত চর্চার আরেক সংগঠন গণসংগীতশিল্পী পরিষদের সাবেক সভাপতি। 

সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদক দিয়ে সম্মানিত করে।