ঝুম বৃষ্টি উপেক্ষা করে পূর্বনির্ধারিত সময়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেলেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। একইভাবে তাকে শেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে কিংবা একনজর দেখার আশায় ভিড় জমিয়েছেন অসংখ্য ভক্ত-স্বজন।
শনিবার (২৪ জুলাই) বেলা ঠিক ১২টায় ফকির আলমগীরের নিথর দেহ বহন করা অ্যাম্বুলেন্সটি এসে থামে শহীদ মিনারের কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে। তারও আগেই উপস্থিত অনেকেই। কারও হাতে ফুলের তোড়া, কারও মাথায় ছাতা। শহীদ মিনারের বেদিতে ফকির আলমগীরের জন্য সব গুছিয়ে রেখেছিল সম্মিলত সাংস্কৃতিক জোট।
ফকির আলমগীরের ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব বলেন, ‘বাবাকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ১টা পর্যন্ত এখানে রাখা হবে। এরপর বাদ জোহর তালতলা কবরস্থানে দাফন করা হবে।’
এর আগে শনিবার বেলা ১১টার দিকে খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাত ১০টা ৫৬ মিনিটের দিকে প্রাণ হারান নন্দিত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর।
জানা গেছে, ১৪ জুলাই ফকির আলমগীরের করোনাভাইরাস পজিটিভ ফল আসে। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
ফকির আলমগীর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম শিল্পী। তারও আগে থেকে তিনি শ্রমজীবী মানুষের জন্য গণসংগীত করে আসছিলেন। স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রেখেছেন ফকির আলমগীর।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এরমধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ১৯৮২ সালের বিটিভির ‘আনন্দমেলা’ অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পর দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলে। কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গানটির সুরও করেছেন ফকির আলমগীর।
সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদক দিয়ে সম্মানিত করে।