এটাই আসিফ আকবরের জীবনে বিশাল ‘আনন্দ’ 

আসিফ ও আনন্দজিভারতের বিখ্যাত সংগীত পরিচালক যুগল কল্যাণজি ও আনন্দজি। ষাট ও সত্তর দশকে তুঙ্গস্পর্শী আলোচনায় ছিলেন তারা। তাদের হাত ধরে এসেছে ‘গীত’, ‘জাব জাব ফুল খিলে’, ‘ডন’, ‘কালাকার’, ‘সফর’ ‘মোকাদ্দার কা সিকান্দার’, ‘ত্রিদেব’ ছবির কালজয়ী সব গান।  

২০০০ সালের ২৪ আগস্ট পৃথিবী থেকে বিদায় নেন কল্যাণজি। বেঁচে আছেন আনন্দজি। এই জীবন্ত কিংবদন্তি জানালেন, সম্ভব হলে বাংলাদেশের আসিফকে নিয়ে তৈরি করতেন গান! 

কানকথা নয়, এই সংগীত পরিচালক ফোন করে সরাসরি কথাগুলো বললেন আসিফকে! সেই সুখস্মৃতি আসিফ শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
 
আসিফ বলেন, ‘ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সংগীত পরিচালক রাজা কাশেফ আর তার স্ত্রী রুবাইয়াৎ জাহানের বদৌলতে শ্রদ্ধেয় আনন্দজির সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি এক সপ্তাহ আগে। শারদীয় দুর্গাপূজা কেন্দ্রিক বিশ্রী হট্টগোলে মন খারাপ থাকায় আর শেয়ার করিনি। আলাপের দু’দিন আগেই লন্ডনে আনন্দজির মেয়ে প্রয়াত হয়েছেন। সেই শোক বুকে চেপেই তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। এটাই আমার জীবনের বিশাল আনন্দ।’

আসিফের গান রাজার কাছেই প্রথম শুনেছেন আনন্দজি। এরপর ফোনে কথা বলেন। আসিফ বলেন, ‘‘গভীর রাতের ফোনে আমি একটু হাইপার হয়েই উনার সঙ্গে ইংরেজি, হিন্দি, বাংলা আর কুমিল্লার লোকাল ভাষায় কথা বলেছি। আনন্দজি হুট করেই বললেন, উনার সুরারোপিত ‘কালাকার’ সিনেমার ‘নীল নীল আম্বর পার’ গানটি শোনাতে। প্রশ্ন কমন পড়ে যাওয়ায় আমি বিনা বাক্যব্যয়ে গাওয়া শুরু করলাম। তিনি খুব মজা নিয়েই শুনলেন। একটু আফসোস করেই বলেন, ‘আমি যদি এখন গান তৈরি করতাম, অবশ্যই তোমাকে দিয়ে আমার তৈরি গান গাওয়াতাম।’ ভদ্রলোক ১৯৯৪ সালেই বলিউড মিউজিক থেকে রিটায়ার করেছেন। আমি খুব আনন্দিত উনার মতো একজন গ্রেট কম্পোজারের সঙ্গে কথা বলতে পেরে। আমার খায়েশ কোনোভাবেই অনেক বিশাল নয়। ডিফিকাল্ট বাংলাদেশে বিনা শিক্ষায় গান গেয়ে খাচ্ছি। দেশের কিছু মানুষ আমাকে একটু চেনেন, জানেন, সম্মানও দেন। আল্লাহর রহমতে এটাই আমার জীবনের না চাইতে পাওয়া সেরা অর্জন। আনন্দজির মতো কিংবদন্তি একজন সংগীত স্রষ্টার সঙ্গে কথা বলতে পারবো- এই চিন্তাটাই তো মাথায় জীবনে আসেনি।’’

এর আগে আসিফের কণ্ঠের প্রশংসা করেছিলেন ভারতের আরেক প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। লিখেছেন গানও!