এক মলাটেই থাকছে দেশীয় ব্যান্ডের ৬ দশক!

বাংলাদেশের জন্ম ও ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ রকসংগীতের ইতিহাস। মূলত ৬০-এর দশকে বাংলায় রকসংগীতে নতুন বিপ্লবের সূচনা ঘটে। ৭০ ও ৮০’র দশকে যা অগণিত ব্যান্ডের মাধ্যমে গানে গানে ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশ। মূলত ৮০’র দশকের মাঝামাঝিতে এসে রকের সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশি হেভি মেটাল। যেটি নানা ধারায় বিস্তৃত হয়ে আজও জাগিয়ে রেখেছে বাংলার রক মিউজিক। 

মূলত বাংলার এই রক বিপ্লবের দীর্ঘ ইতিহাস এবং ব্যান্ডগুলোর জন্ম-সৃষ্টি ও বর্তমান অবস্থার পুরোটা উঠে আসছে এক মলাটে! যেটা এতকাল সংগীতপ্রেমি কিংবা পাঠকদের কাছে ছিলো অবিশ্বাস্য। সেটাকেই এবার বিশ্বাসের তালিকায় তুলে আনছেন মিলু আমান ও হক ফারুক। দুজনেই পরিচিত লেখক, তবে রক ঘরানায় তাদের চলাচল দীর্ঘ দিনের। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তথ্যনির্ভর ভিন্ন ধারার এই সংকলন করছেন তারা। নাম দিয়েছেন ‘বাংলার রক মেটাল’। যা প্রকাশ হচ্ছে ২০২২ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায়।  
  
বইটির অন্যতম লেখক-সাংবাদিক হক ফারুক জানান, এই বইয়ে ৬০ দশক থেকে শুরু করে ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলা রক ও মেটাল মিউজিকের পূর্ণ ইতিহাস তুলে ধরা হবে। থাকবে শতাধিক রক ও হেভি মেটাল ঘরানার ব্যান্ডের জন্মকথা, পথচলার ইতিবৃত্ত ও ডিসকোগ্রাফি।

বইটির অন্য লেখক মিলু আমান বলেন, ‘আমরা উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া বা ইন্টারনেট থেকে কোনও তথ্য নিয়ে এই বইটি সাজাতে চাই না। বরং সরাসরি ব্যান্ড সংশ্লিষ্ট মিউজিশিয়ান বা সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে কাজটি করছি। বইতে আমরা চেষ্টা করছি শতাধিক ব্যান্ডের সর্বশেষ তথ্যটি তুলে ধরতে। রক ও মেটাল ধারার সব ব্যান্ডের তথ্যই থাকবে। বাদ  যাবে না ৯০ বা ২০০০ পরবর্তী সময়ের আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ডগুলোও।’

হক ফারুক বলেন, ‘‘আমাদের গবেষণায় পেয়েছি পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম ব্যান্ড হলো ‘আইওলাইটস’। সেটি থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ব্যান্ড ‘আন্ডারগ্রাউন্ড পিস লাভারস’ বা তার পরবর্তীতে ‘সোলস’, ‘মাইলস’, ‘এলআরবি’ থেকে আজকের ‘ট্রেইনরেক’ বা ‘গ্রাউন্ড ফোর্স’- সবার তথ্য নিয়ে সাজানো হচ্ছে গ্রন্থটির ইতিহাস পর্ব। যেখানে ইতিহাসের পাশাপাশি ব্যান্ডগুলোর সকল অ্যালবাম ও জনপ্রিয় গানের কথাও থাকবে।’’
 
মিলু-ফারুক লেখকদ্বয় জানান, দেশের প্রথম হেভি মেটাল ব্যান্ড ‘ওয়েভস’ থেকে শুরু করে ‘ওয়ারফেজ’, ‘রকস্ট্রাটা’, ‘ইন ঢাকা’, ‘এসেস’; তারও পরে ‘ক্রিপটিক ফেইট’, ‘আর্টসেল’, ‘ব্ল্যাক’, ‘মেটাল মেইজ’ হয়ে ‘নেমেসিস’, ‘এভোয়েড রাফা’- সবার আলাদা আলাদা ইতিহাস, ডিসকোগ্রাফি তুলে ধরা হবে এই গ্রন্থে। ‘সুইট ভেনম’, ‘লেজেন্ড’, ‘পেপার রাইম’ বা ‘স্বাধীনতা’র মতো ব্যান্ড- যাদের কোনও তথ্যই সে অর্থে পাওয়া যায় না, তাদের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাসও থাকবে এতে।

এরমধ্যে বইয়ের পাণ্ডুলিপি ও প্রচ্ছদ শেষ। প্রচ্ছদ এঁকেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। প্রকাশনা সংস্থার বিষয়টিতে থাকছে চমক, তাই সেটির ঘোষণা এখনই দিতে চাইছেন না লেখকদ্বয়।