সহসা ফিরছেন না শাকিব খান, যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে হচ্ছে ছয় মাস!

গত ১২ নভেম্বর প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দেন ঢাকাই ছবির শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। অনেকের মতে বাংলা ছবির প্রধান এই নায়ক শুধু ‘রথ দেখতে নয়, বরং কলাও বিক্রি’ করতে গেছেন। কীভাবে?

উত্তরে যাওয়া যাবে আরও পরে। আগে দেখে নেওয়া যাক শুরুর কথা।

যাওয়ার আগে এই তারকা একাধিক গণমাধ্যমে জানান, এই তো ১০ দিন, তারপরই ফিরবেন তিনি। এরপর এক মাস পার হলেও দেশে ফেরার নামটি নেননি শাকিব। উল্টো পরিচালকরা উড়ে যাচ্ছেন তার কাছে।

এমনকি জানুয়ারির মাঝামাঝি নিউ ইয়র্কেই শুরু হবে তার নতুন ছবির কাজ। তাহলে শাকিব আসছেন কবে?

বাংলা ট্রিবিউনকে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, আগামী আরও পাঁচ মাস তিনি থাকবেন যুক্তরাষ্ট্র। শাকিবের বেশ পরিকল্পিত এ যাত্রা মাস ছয়েকের জন্য। আগামী মে মাসের আগে এ তারকাকে দেশে পাওয়া যাবে না।

এমনকি জানুয়ারিতে হতে যাওয়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন না পেছালে সেখানেও অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন শাকিব।

তিনি জানান, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রে তাদের নতুন ছবির শুটিং শুরু হবে। এ কারণে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। তবে যদি নির্বাচন পিছিয়ে যায়, তখন বাংলাদেশে ফিরলে হয়তো নির্বাচন করবেন। 

এদিকে, আলোচিত তিনটি ছবির দৃশ্যধারণ শেষ করে যুক্তরাষ্ট্র গেছেন শাকিব খান। যেগুলোর কোনও না কোনও কাজ এখনও বাকি আছে।

এরমধ্যে ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘অন্তরাত্মা’র কাজ পুরোপুরি শেষ। বাকি আছে চূড়ান্ত এডিটিং। এরপরই শুরু হওয়ার কথা ‘অন্তরাত্মা-২’ ছবির দৃশ্যধারণ।

পরিচালক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘আমি জানি, শাকিব থার্টিফার্স্টের পরপরই দেশে আসবেন। ‘অন্তরাত্মা’র চূড়ান্ত এডিটিং শেষ হলে ‘অন্তরাত্মা-২’র কাজ শুরু হবে। তবে সেটা হতে বেশ সময় লাগবে। শাকিব দেশে ফিরলে তবেই সেটার কাজ হবে।’’

তপু খান পরিচালিত ‘লিডার-আমিই বাংলাদেশ’ ছবির গানের শুটিং বাকি। কিন্তু সেটা কোথায় হবে বিষয়টি পরিষ্কার নন এর পরিচালক। তিনি বললেন, ‘শাকিব আমেরিকায়। আবার নায়িকা বুবলী দেশে। আমেরিকায় আদৌ এর কাজ হবে কিনা, আমি নিশ্চিত নই। বিষয়টি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে।’

অন্যদিকে, ‘গলুই’ পরিচালক এসএ হক অলিক এরমধ্যেই পৌঁছেছেন নিউ ইয়র্কে। তিনি শুধু ডাবিংয়ের জন্য নায়কের কাছে ছুটে গেছেন। যা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

ছবির প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু জানালেন কেন শাকিব ফিরতে পারছেন না বা ডাবিং কেনই বা নিউ ইয়র্কে করতে হচ্ছে?

এই প্রযোজকের ভাষ্য, ‘শাকিব আমেরিকায় স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করেছেন। যে কারণে তাকে ছয় মাস সেখানে থাকতে হবে। ইতোমধ্যে এক মাস হয়েছে। যদি সব ঠিকঠাক থাকেও তাও মিনিমাম আরও চার মাস তাকে সেখানে থাকতে হবে।’

ডাবিংয়ের জন্য নিউ ইয়র্কে যেতে হলো, এতে করে তো খরচ বাড়লো- এমন প্রশ্নে তিনি বললেন, ‘কী আর করার আছে? আমাকে ডিসেম্বরের মধ্যেই ছবিটি জমা দিতে হবে। কারণ, এটি অনুদানের চলচ্চিত্র। সে কারণে এসএ হক অলিক ডাবিংটি সারতে গেছেন। আগামী সপ্তাহেই পরিচালক দেশে ফিরবেন।’

এদিকে জানা যায়, একটি নয়, দুই বা ততধিক ছবির শুটিং আমেরিকায় করবেন শাকিব খান। এরমধ্যে দুটি সিনেমা পরিচালনা করবেন হিমেল আশরাফ। যার একটির নাম ‘মায়া’।

শাকিবের ঘনিষ্ঠজন জানিয়েছেন, এবার নায়কের পরিকল্পনা বেশ সুদূরপ্রসারী। শুধু ছবিতে অভিনয় নয়, চাক্ষুষ দাঁড়িয়ে ব্যবসা করতেই নিজের এসকে ফিল্মস থেকে চারটি ছবি নির্মাণের কথা ভাবছেন। এরমধ্যে একটি অথবা দুটি সিনেমার শুটিং, এডিটিং ও ডাবিং শেষে আগামী রোজার ঈদে সেখানকার হলে মুক্তি দেবেন কিং খান। আর সেই ব্যবসার লাভসমেতই দেশে ফেরার পরিকল্পনা তার। সঙ্গে আমেরিকায় স্থায়ী বসবাসের সনদটাও হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা তার।  

অবশ্য শাকিব নিজেই সে ইঙ্গিত দিয়েছেন। নিউ ইয়র্কে অংশ নেওয়া একটি পুরস্কার অনুষ্ঠানে গত ১৪ নভেম্বর জানান, যুক্তরাষ্ট্রে তিনি রোজার ঈদ উদযাপন করতে চান এবং ঈদ উপলক্ষে একটি সিনেমা করতে চান, যেটি বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেও মুক্তি পাবে। তবে সেটা যে এতটা পরিকল্পিত তা হয়তো হাত দূরত্বে থাকা মানুষটিও বুঝতে পারেননি!