ক্ষুব্ধ-বিষণ্ণ পরীমণি

‘আবার যদি কখনও এফডিসিতে কোরবানি না হয়, সেদিন আমি আছি’

২০১৬ সাল থেকে টানা পাঁচ বছর কোরবানির ঈদে অনন্য নজির দেখিয়ে আসছেন নায়িকা পরীমণি। তবে গতবার সেটিতে ছেদ পড়ে। কারণ, কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দেয় এফডিসির ভেতর কোরবানি দেওয়া যাবে না!

পরে বাধ্য হয়ে গত বছর (২০২১) এফডিসির বাইরে সড়কের ওপর ৬টি গরু কোরবানি দেন। যথারীতি মাংস বিলিয়ে দেন সিনেমা সংশ্লিষ্ট শিল্পী-কুশলীদের মাঝে। এবারও কি তাই করছেন?

জবাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন পরী। বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গতবার কি এফডিসিতে কোরবান দিতে পেরেছি আমি? আমাকে বাইরে দিতে হলো। অথচ এফডিসির কাক-পক্ষীও জানে প্রতিবছর আমি এই কাজটি কতো আনন্দ আর আগ্রহ নিয়ে করি। গতবারও ঈদের অনেক আগেই আমি গরু কিনে এফডিসির সামনে রেখেছি। সেটা সবাই দেখেছে। অথচ ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হলো না আমাকে। টানা পাঁচ বছরের যে সুন্দর কালচার তৈরি করেছি সেটা হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হলো।’

সবাই জানেন পরীমণি অধীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তার অনাগত সন্তানের জন্য। এমন পরিস্থিতিতেও কি কোরবানির ধারা অব্যাহত রাখছেন? জবাবে পরী বলেন, ‘যেমন অন্য আট-দশ জন মানুষ কোরবানি দেয়, এবার আমিও তাই করবো। আমার ছোট সংসার। নানুভাই, রাজ আর আমি। এবার আমরা আমাদের মতো করে ছোট পরিসরে কোরবানি দেবো।’  

অসহায় সহশিল্পীদের কোরবানির মাংস বিতরণ করছেন পরীমণি (ফাইল ছবি)এরপরই পরীর কণ্ঠে ঝরলো অভিমানের সুর। বললেন, ‘২০১৬ সাল থেকে আমি একরকম শপথই নিয়েছিলাম, যতদিন বেঁচে থাকবো এফডিসির অসহায় সহকর্মীদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য কোরবানির ঈদটাকে আমি উৎসর্গ করবো। সেটা করেছিও টানা ছয় বছর। প্রতিবছর আমার পরিবার বড় হয়েছে, একটি করে গরু বাড়িয়েছি। সর্বশেষ ছয়টি গরু কোরবানি দিয়েছি। এবার সাতটি গরু হওয়ার কথা ছিল। তা তো আর হচ্ছে না। আমি জানি ঈদের সারাটা দিন আমি ঘরে বসে থাকলেও মনটা পড়ে থাকবে এফডিসির ভেতর। হয়তো পুরনো ছবিগুলো দেখবো মন খারাপ করে। হয়তো কাঁদবো। আমি আসলে জানি না সেদিন আমি কতটা বিষণ্ণ থাকবো।’ 

ঢোক গিলে বলেন, ‘আমার পেটে এখন ৮ মাসের সন্তান। এ অবস্থায় চাইলেও আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজটি করতে পারবো না। এফডিসিতে এখন কোরবানি দেওয়ার মতো অনেক সমিতি আছে। আমাকেও তাদের দরকার নেই। তারাই তাদের এফডিসিতে কোরবানি দিক। তবু উৎসবটা বেঁচে থাক এফডিসির চার দেয়ালে, সেটাই আমার প্রত্যাশা। কারণ, আমি জানি এদিন অসহায় মানুষগুলো কতটা আনন্দে থাকে। যেভাবেই হোক ওদের আনন্দটা বাঁচুক।’

বিষণ্ন পরীমণিনা, এফডিসির নিষেধাজ্ঞা আর নিজের শারীরিক পরিস্থিতিতেও হাল ছাড়ছেন না ঢাকাই সিনেমার প্রীতিলতা। জানিয়ে রাখলেন, ‘আবার যদি কখনও এফডিসিতে কোরবানি দেওয়া বন্ধ হয়, সেদিন থেকে আবার আমি শুরু করবো। ইনশাআল্লাহ।’   

পরীমণি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাওয়ার আগে সর্বশেষ শেষ করেন অরণ্য আনোয়ারের সিনেমা ‘মা’-এর শুটিং।প্রাণবন্ত পরীমণি (ফাইল ছবি)