গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রয়াণ

‘সবসময় বলতেন, তার দুটি ছেলে উপল ও মনির’

কিংবদন্তি গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রয়াণে শোকে স্তব্ধ দেশের সংগীত ও সিনেমা অঙ্গন। অধিকাংশের কাছেই তিনি ছিলেন অভিভাবকের মতো। সবাইকে ভালোবাসা-স্নেহ-শাসনে রাখতেন। তবে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনির খানের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল একেবারে বাবা-ছেলের মতো।

মনির খানকে নিজের ছেলে বলেই ডাকতেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তাই পিতৃপ্রতিম মানুষটিকে হারিয়ে নিজের কান্না ধরে রাখতে পারলেন না ‘অঞ্জনা’খ্যাত গায়ক। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) গাজী মাজহারুল আনোয়ারের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে অশ্রুসিক্ত হন তিনি।

এর আগে বিষণ্ণ মন নিয়ে মনির খান বলেন, ‘আমি তার সন্তানতুল্য। সবসময় বলতেন, তার দুটি ছেলে- উপল ও মনির। এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, এই জায়গা দিয়ে কতবার হেঁটে গেছি-এসেছি, বলে শেষ করা যাবে না। তার আদর, ভালোবাসা, স্নেহ, শাসন সবকিছু থেকে বঞ্চিত হলাম আজ। এ প্রতিষ্ঠান আবার কবে, কখন বাংলাদেশের জন্য আসবে, জানি না। সূর্য নিভে গেলো।’

শেষ কবে কথা হয়েছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে মনির খান বললেন, “আমার সঙ্গে প্রতিদিনই কথা হতো। আমি ফোন না করলে তিনিই কল দিয়ে বলতেন, ‘কী বাবা শরীর খারাপ? আজকে যে কথা বললে না!’ আমার শেষ জন্মদিন গেলো ১ আগস্ট। সেদিন শুভেচ্ছা জানিয়ে আমাকে একটা গান পাঠিয়েছিলেন। আর বলেছেন, ‘বাবা, এর চেয়ে মূল্যবান কোনও সম্পদ আমার কাছে নেই। তোমাকে কী দেবো, একটি গান পাঠালাম। যত্ন করে রেখো। আর আমার জন্য দোয়া করো। মাঝে মধ্যে শরীরটা খারাপ হয়।’ আমি বলেছি, ‘কাকা সাবধানে থাকবেন। ওষুধ ঠিকমতো খাবেন।’ খুব সচেতন মানুষ ছিলেন, আবার সহজ-সরলও। তার লেখনিশক্তি, কর্ম, এই সাংস্কৃতিক জগতে তার যে বিচরণ, এর মধ্যেই তিনি বেঁচে থাকবেন।’’

কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন মনির খান। হাত দিয়ে মুখ লুকিয়ে অঝোরে কেঁদেছেন। শেষে নিজেকে সামলে শুধু এটুকু বললেন, ‘ওনার জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ তায়ালার কাছে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। দোয়া করবেন সবাই।’অঝোরে কাঁদছেন মনির খান ও আবিদা সুলতানা/ ছবি: সাজ্জাদ হোসেন