দিল্লি থেকে দোয়া চেয়েছেন শবনম ফারিয়া

অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া পর্দায় যতটা মিষ্টি, সোশাল হ্যান্ডেলে কিন্তু ততটাই ঠোঁটকাটা! উচিত কথা কিংবা মনের কথা সবার সঙ্গে শেয়ার করতে সাত-পাঁচ ভাবেন না। এর জন্য তাকে অনেক মূল্যও দিতে হয়েছে, হচ্ছে এখনও।

তবে দিন শেষে পর্দার ভেতরে ও বাইরে একটা স্বচ্ছ জীবন কাটাতে চান এই ‘দেবী’কন্যা। সেটি নিশ্চিত করতেই তিনি মনের কথা বলে ফেলেন খুব সহজে। এই যেমন শনিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দূর দিল্লি থেকে মুঠোফোনে চাইলেন দোয়া। তার হেটার ও লাভার, প্রত্যেকের উদ্দেশেই বললেন, ‘সবাই আমার জন্য একটু দোয়া করবেন। যেন দ্রুত সহিসালামতে নিজ শহরে ফিরতে পারি। কাজে ফিরতে পারি।’

শবনম ফারিয়াকারণ, লম্বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কাল (২৭ নভেম্বর) দিল্লির একটি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অভিনেত্রী। কাল পেরুলেই তাকে তোলা হবে অস্ত্রোপচারের টেবিলে। অস্ত্রোপচার তো দূর-কি-বাত, জীবনে নাকি তিনি হাসপাতালেই ভর্তি হননি। ফলে এই যাত্রায় বেশ নার্ভাস শবনম।

বললেন, ‘বাবা চিকিৎসক ছিলেন। তাই সব চিকিৎসা ঘরেই হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। কিন্তু এবার ভর্তি হতে হচ্ছে, হবে অপারেশনও। এটা আমার জন্য সত্যিই ভীতিকর বিষয়।’

ঢাকার শুটিং ইউনিট থেকে দিল্লি হাসপাতালে পৌঁছানোর পেছনেও রয়েছে ছোট করে একটা বড় গল্প। অনেক দিন ধরেই শবনম ফারিয়ার নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। ধারণা করেছেন, তার হার্টে সমস্যা। কারণ, এর আগে তার বাবা, মা ও বড় বোনের হার্টে জটিলতা ছিল। তাই ভয়টা শুরু থেকেই হৃদয়ঘটিত বলে মনে করছিলেন শবনম ফারিয়া। কিন্তু দেশ-বিদেশের একাধিক চিকিৎসক দেখানো শেষে শবনম জানতে পারলেন তার আসলে হৃদয়টা এখনও শতভাগ ফ্রেশ আছে! তবে জটিলতা রয়েছে নাকে!

শবনম ফারিয়াফারিয়া বললেন, ‘আমার প্রায় সবসময় ঠান্ডা লেগে থাকতো। এরপর এক বছর ধরে লক্ষ করছিলাম নিশ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। ফলে ধরেই নিয়েছি এটা আমার পারিবারিক সূত্রে পাওয়া হৃদয়ের জটিলতা। সে হিসেবে অনেক কার্ডিয়াক স্পেশালিস্ট দেখিয়েছি। অবশেষে দিল্লি এসে নিশ্চিত হলাম, সমস্যাটা কার্ডিয়াক নয়, নাকে। আমার নাকের একটা হাড় বাঁকা। যা ক্রমশ বাঁকছে। সেটি কেটে ফেললে সমস্যার সমাধান হবে বলে চিকিৎসক বলেছেন। তাই এখানে আসা।’

নাকের অপারেশন শেষে তিন দিন থাকতে হবে হাসপাতালে। এরপর ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতেই বড় বোনের বাসায় থাকবেন। ঢাকায় ফিরবেন ৭ ডিসেম্বর। কারণ, কাজও জমে আছে অনেক।

‘এই নিশ্বাস জটিলতা নিয়ে ইনফ্যাক্ট আমি গত অক্টোবর থেকে দৌড়াচ্ছি হাসপাতালে। ফলে নিয়মিত শুটিংগুলো আটকে গেছে অনেক। এরমধ্যে একটা ওয়েবফিল্মও রয়েছে। ফলে আশা করছি ৭ ডিসেম্বর ঢাকায় পৌঁছে কিছু দিন বিশ্রাম নিয়ে দ্রুত কাজে ফিরতে পারবো’, দিল্লি থেকে দূরালাপনিতে যোগ করলেন শবনম।

শবনম ফারিয়াপ্রশ্ন, নাকে অস্ত্রোপচারের পর কি পুরনো সৌন্দর্যে কোনও ব্যাঘাত ঘটবে! অভিনেত্রী বলে কথা। গালভরে হেসে দিলেন। বললেন, ‘অপারেশনের কথা শুনে এই প্রশ্নটা সবার আগে করেছি চিকিৎসককে। তিনি বললেন, না না। কিছু হবে না। যেমন ছিল তেমনই থাকবে।’

দিল্লির হাসপাতালে ঢোকার আগে কিংবা অস্ত্রোপচারের টেবিলে ওঠার আগে দেশবাসীর প্রতি কোনও বার্তা দেবেন কি! না, হাসলেন না। বরং সিরিয়াসলিই নিলেন প্রশ্নটি। শবনম ফারিয়া বললেন, ‘আমি সত্যিই হাসপাতাল নিয়ে নার্ভাস। আমি জানি এটা দিল্লির ওয়ান অব দ্য বেস্ট হাসপাতাল। এখানে আমার বোন-ভাগ্নিরা আছে। ঢাকা থেকেও আমার পরিবারের সদস্যরা এসেছেন। এখানে আমি আমার বাসা থেকে আনন্দে আছি। কিন্তু হাসপাতাল ভীতিটা রয়েছে। সবার কাছে দোয়া চাই। যেন ভয়টা কম লাগে। যেন ভয়টাকে জয় করে ফিরতে পারি। যেন অপারেশনটা সুন্দরভাবে শেষ হয়। প্লিজ।’শবনম ফারিয়া