বাবাকেই তো নদীর পাড়ে রেখে এসেছি: চঞ্চল চৌধুরী

দুদিন আগেই বাবাকে হারিয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। টানা দুই সপ্তাহ লাইফ সাপোর্টে থাকার পর গত মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিশ্বাস ত্যাগ করেন রাধা গোবিন্দ চৌধুরী। তিনি পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন।

বাবার মৃত্যুর পর স্বাভাবিকভাবেই ভেঙে পড়েছেন চঞ্চল। গত দুদিন কিছুই বলেননি। পাহাড়সম দুঃখ চেপে সেরেছেন বাবার শেষকৃত্য। কিন্তু বাবার শূন্যতা কোনোভাবেই মানতে পারছেন না।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে সোশাল মিডিয়ায় বাবার সঙ্গে তোলা ছবি শেয়ার করে মনের কিছু কথা বলেছেন চঞ্চল। লিখেছেন, ‘গতকাল (২৮ ডিসেম্বর) নিজ গ্রাম কামারহাটের পদ্মাপাড়েই তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাবা মিশে গেলো এই গ্রামেরই আলো বাতাসে, পদ্মার জলে। সন্ধ্যায় ধর্মীয় আচার শেষে যখন নদীর পাড় থেকে বাড়ি ফিরলাম, তখন ভুলেই গিয়েছিলাম যে বাবাকেই তো নদীর পাড়ে রেখে এসেছি।’

নির্ঘুম রাতের কথা জানিয়ে চঞ্চল বলেন, “সারা রাত দুই চোখের পাতা এক করতে পারিনি। সারা বাড়িময়, ঘরময় যেন বাবা গুটি-গুটি পায়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। এই বুঝি কখন আমায় ডাক দিয়ে বলবে, ‘চঞ্চল…বাবা ঘুমাইছো?’ বাবার কোনও কথা আর কোনও দিন কানে বাজবে না, বাবাকে দেখতে পাবো না, এগুলো কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।”

চঞ্চল জানান, তার বাবা শীত সকালে যে শাল পরতেন, যেখানে বসে রোদ পোহাতেন, সেখানে বসেই কথাগুলো বলছেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘যখন এই কথাগুলো লিখছি, শীতের এই সকালে, বাবার শালটাই আমার শরীরে জড়ানো। যে জায়গায় রোদে বসে আছি, এ জায়গায় বসেই বাবা রোদ পোহাতো। রোদের উষ্ণতা নয়, বাবার শরীরের কোমল উষ্ণতা খুঁজে ফিরছি এখন, বাকি জীবনটা হয়তো এভাবেই খুঁজতে হবে।’

শোক-বিষাদের এই সময়ে যারা সমবেদনা জানিয়েছেন, শেষকৃত্য অব্দি পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন অভিনেতা চঞ্চল।