‌‘ব্যক্তিগত খবর’ প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ ফারিণ, দিলেন হুমকি

বেজায় চটলেন এই সময়ের অন্যতম অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। যেমনটা চটেছিলেন কিছুদিন আগে একটি শপিং মলের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে। অবশ্য এরপর চেয়েছেন ক্ষমাও! তবে এবার ক্ষুব্ধ ক্ষোভ প্রকাশ করলেন গণমাধ্যম তথা সাংবাদিকদের প্রতি। দিয়েছেন হুমকিও। 

জানালেন, সাংবাদিকদের তিনি শ্রদ্ধা করেন। তবে কেউ তার ব্যক্তিজীবন নিয়ে মনগড়া গল্প প্রকাশ করলে সেটা তিনি সহ্য করবেন না।

একটু পেছনে যাওয়া যাক। কিছুদিন হলো ঢাকাই মিডিয়ার বাতাসে ভাসছে, তাহসান খান-তাসনিয়া ফারিণ নাকি খুব নীরবে লম্বা প্রেম পর্ব সেরে বিয়ে-সংসারেও গড়িয়েছেন! খবরটি সত্যি হলে নিশ্চয়ই বড় ঘটনা। মিথ্যে হলে সেটিও বড় দুর্ঘটনার মতো।

আপাতত তাহসান-ফারিণের প্রতিক্রিয়ায় বিষয়টিকে ‘বড় দুর্ঘটনা’ বলেই অনুমান করা যায়। তবে যা রটে তা কিছু না কিছু বটে- মিডিয়ায় এমন নজির শতকরা ৯০ ভাগ।

সেটি বিচারের জন্য সময় লাগবে আরও খানিক সময়। তার আগেই বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া দিলেন তাসনিয়া ফারিণ। বুধবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অভিনেত্রী প্রকাশ করেন ‘তাহসানকে বিয়ে’ প্রসঙ্গে লম্বা প্রতিক্রিয়া। যেখানে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি যেমন সম্মান প্রদর্শন করেছেন, তেমনি দিয়েছেন হুমকিও। মোটাদাগে তুলে ধরেছেন নিজের অবস্থান। তার মূল অংশটা এমন- তিনি তার ব্যক্তিগত জীবন কখোনোই গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে চান না!

বিচ্ছিন্ন আলাপ না করে পড়ে নেওয়া যাক তার পুরো ফেসবুক প্রতিবাদ-পত্রটি-   

সাংবাদিক ভাই-বোনদের আমি শ্রদ্ধা করি। সম্মানের চোখে দেখি। তাদের সবাইকে আমার পেশাদার জীবনের অংশ মনে করি। সাংবাদিকতা আমার চোখে মহতী পেশা। কিন্তু কিছু সাংবাদিক যাচাই না করে মনগড়া কোনও তথ্য ছড়িয়ে দিলে ভীষণ কষ্ট লাগে। এটাই আমার এখনকার অনুভূতি।
 
কষ্ট নিয়ে বলতে হচ্ছে- কোনও সাংবাদিক, নিউজ মিডিয়া এবং অনলাইন মিডিয়া যদি ভিত্তি, প্রমাণ, উৎস বা তথ্য ছাড়া আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা, ভ্রান্ত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিংবা অবমাননাকর সংবাদ প্রকাশ করে, যার কারণে আমার ইমেজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তাহলে আমি আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
আমি বরাবরই চুপচাপ কাজ করেছি। আমার ব্যক্তিজীবন সবসময় লাইমলাইটের বাইরে রাখতে পছন্দ করি। খুব কম মানুষই ব্যক্তিগত ফারিণকে চেনে। কিছু না বলার অর্থ এই নয় যে, কিছু বলার ক্ষমতা আমার নেই। বাকস্বাধীনতার অপব্যবহার রোধে আমার যা করণীয় তা করবো। 

আমার ব্যক্তিজীবন নিয়ে মনগড়া গল্প ছড়ানোর অধিকার আমি কাউকে দেইনি। কেউ সেটা করলে আমি সহ্য করবো না। সম্পূর্ণ কাল্পনিক একটা বানোয়াট গল্পের ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করি না আমি। আমার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলতে চাই, আমার ব্যক্তিজীবন নিয়ে জানানোর মতো কোনও খবর এই মুহূর্তে নেই। আমার এবারের ঈদের কাজগুলোর আপডেট একে একে পোস্ট করতে চাই। ধন্যবাদ।

শেষ হলো তাসনিয়া ফারিণের দীর্ঘ ও ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া।

জানা গেছে, সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে তাহসান-ফারিণের প্রেম-বিয়ের খবর প্রকাশ হয়। সেটি সোশ্যাল হ্যান্ডেলে ভাইরাল হয়। তবে এর সূত্রপাত সাম্প্রতিক নয়, ২০২১ সাল থেকে। সে বছর ভালোবাসা দিবসে তাহসান-ফারিণ জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করেন ‘কমলা রঙের রোদ’ নামের একটি নাটকে। এটি নির্মাণ করেন শিহাব শাহীন। এতে তারা স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেন। এরপর এটির সিকুয়েল নির্মিত হয় ‘কমলা রঙের রোদ ২’ নামে। মূলত সেখান থেকেই দুই দফায় বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয় ‘তাহসান-ফারিণের সংসার’ শিরোনাম দিয়ে! ছড়ায় গুঞ্জন।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাহসান খানও। তবে সেটা বেশ স্বাভাবিক স্বরে। তার ভাষ্য, ‘কদিন পরপরই শোনা যায়, আমি আর ফারিণ নাকি সংসার করছি! এটা নানাভাবে অনলাইন মাধ্যমে আসছে।’

এরপর তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন। বলেন, ‘বছর তিনেক আগে আমি ও ফারিণ একটি নাটকে অভিনয় করেছিলাম। যেটার সিকুয়েলও হয়। নাটকের গল্প সংসারজীবন নিয়ে। এরপর থেকে বেশ কয়েকটি ভুঁইফোঁড় অনলাইন মাধ্যম নাটকের গল্পটা বাস্তবের মতো করে শিরোনাম করতে থাকে। কখনও লেখা হয়, ‘সংসারজীবনে তাহসান-ফারিণ’, আবার কখনও ‘সংসার জীবনের নতুন অধ্যায়ে তাহসান-ফারিণ’। শুধু ক্লিকবিটের কারণেই বারবার আমাদের এভাবে সামনে আনা হয়। এটা খুবই বিব্রতকর।’