২০১৯ সালের কথা। ধুমধাম আয়োজনে হারুনুর রশীদ অপুকে বিয়ে করেছিলেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। আনন্দ-উল্লাসে দাম্পত্য জীবন শুরু করেছিলেন বটে। কিন্তু তা টিকেছিল ১ বছর ৯ মাস। এরপর বিচ্ছেদ এবং একে-অপরের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ।
সেই অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে বহু আগেই। এরপর ফারিয়ার জীবনে নতুন মানুষ, নতুন সম্পর্ক। কিন্তু এবার আর ঢাকঢোল পেটালেন না। চুপিসারে পারিবারিক আয়োজনে সারলেন বিয়ে। ইনস্টাগ্রামে পারিবারিক মুহূর্তের বিভিন্ন ছবি পোস্ট করে আকারে-ইঙ্গিতে বিয়ের কথাটি বুঝিয়েছেন। তবে স্পষ্টবাক্যে বিয়ের কথা কখনোই বলেননি।
এদিকে বেশ কিছু দিন ধরে শোবিজে কানাঘুষা চলছে, শবনম ফারিয়ার এই সংসারটিও ভেঙে গেছে। অভিনেত্রীর সোশ্যাল হ্যান্ডেলে ‘বিরহ-বিচ্ছেদ’ অনুভবের নানা পোস্ট সেদিকে ইঙ্গিত করে। তবে বিয়ের মতো এই প্রসঙ্গেও পিনপতন নীরবতা পালন করছেন তিনি।
কিন্তু সোমবার (১ মে) রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ বোমা ফাটলো। ফেসবুকে মোহাম্মদ জাহিন খান নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে শবনম ফারিয়াকে ট্যাগ করে লম্বা পোস্ট দেওয়া হয়। যেখানে অভিনেত্রীর দিকে ‘বিস্ফোরক’ অভিযোগের ফিরিস্তি।
এই ফাঁকে একটা বিষয় বলা জরুরি, জাহিনের পোস্টের কয়েক ঘণ্টা আগেই ফারিয়া একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ জীবনে আসে শিক্ষা হয়ে! ২০২১ ও ২০২২ ছিল ভুল মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কাছাকাছি যাওয়ার বছর। ২০২৩ ভালোর দিকে যাচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় ভুয়া লোকজন এমনিতেই দূরে চলে যাচ্ছে! কাছের মানুষ আরও কাছে আসছে। হালকা ও ভালো লাগছে। তরুণদের জন্য একটা উপদেশ, কেউ আপনার সঙ্গে যত ভালো হওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, যদি তার কোনও প্রকার মানসিক সমস্যা (উদ্বেগ ও বিষণ্নতা ছাড়া) কিংবা কোনও মাদক সংশ্লিষ্টতা থাকে, সবসময় তার থেকে দূরে থাকবে। তারা ক্ষতিকর। যতদিনে তুমি বুঝবে যে তারা ক্ষতিকর, সেটা অনেক দেরি হয়ে যাবে। সাবধান থাকো।’
এবার নজর দেওয়া যাক জাহিন খান নামের ওই আইডির পোস্টে। সেখানে তিনি নিজেকে শবনম ফারিয়ার ‘এক্স হাসবেন্ড’ দাবি করেছেন। তার ভাষ্য, ‘মাদকাসক্তি, মানসিক রোগ নিয়ে শবনম ফারিয়ার যে পোস্ট, সেটা আমাকে নিয়ে; আমি তার এক্স হাসবেন্ড। আমি সবাইকে অনুরোধ করছি এক পক্ষের কথা শুনে বিচার না করে আমার কথাগুলো শোনার। আমি যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ভালোই ছিলাম। এরপর আমি বাংলাদেশি আসি এবং শবনম ফারিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু আমি একটা অপরাধে গ্রেফতার হই, যেটা আসলে আমি করিনি। বন্ধুরা আমাকে ওই মামলায় যুক্ত করে ফেলে। কয়েক মাস কারাগারে থাকার পর আমি জামিন পাই। বলতে ভুলে গেছি, আমি গ্রেফতার হওয়ার আগেই আমরা বিয়ে করেছিলাম।’
জাহিন তার পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘যখন আমি জেল থেকে বের হয়ে আসি, তখন থেকেই ফারিয়ার আচরণে পরিবর্তন দেখতে পারি। সে রীতিমতো আমাকে গালাগাল ও মারধর করতো! একটা পর্যায়ে ব্যাপারটা এত বাজে হয়ে যায় যে, আমি কাউকে বলতেও পারিনি। পরবর্তীতে আমি জানতে পারি যে, তার (ফারিয়া) আগের বিয়েটাও এমনই ছিল। এমন জীবন আমি চাইনি, এমন বিয়ে-ভালোবাসা আমি চাইনি, যেখানে একে-অপরের প্রতি কোনও সম্মানবোধ থাকবে না।’
এদিকে বিষয়টিকে নিয়ে শবনম ফারিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘এটা ফেক অ্যাকাউন্ট।’ জাহিন খান নয়, তিনি যাকে বিয়ে করেছেন তার নাম জাহিন রহমান। তবে বিয়ে, সংসার নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি এ অভিনেত্রী।