আশঙ্কাই সত্যি হলো। স্থবির অবস্থায় পড়েছে বিশ্ব বিনোদনের সবচেয়ে বড় ইন্ডাস্ট্রি হলিউড। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধর্মঘট তথা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে শিল্পী-কুশলীরা। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সম্মিলিতভাবে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন স্ক্রিন অ্যাকটরস গিল্ড (এসএজি)। এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজার।
এর আগে গত বুধবার (১২ জুলাই) স্টুডিওগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল এসএজি’র নেতারা। আশা করা হচ্ছিলো, বৈঠক থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পাবেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু এটিকে এখন অর্থহীন বৈঠক বলে ক্ষেভ প্রকাশ করছেন বেশিরভাগ সদস্য। বৈঠক থেকে ইতিবাচক ফল পাননি অভিনয়শিল্পীরা। তাই বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) ভোটের মাধ্যমে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন। এর ফলে ৪৩ বছর পর ধর্মঘটের ডাক দিলেন হলিউডের অভিনয়শিল্পীরা।
গত মে মাস থেকে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চিত্রনাট্যকারেরা। ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার (১৪ জুলাই) থেকে তাদের সঙ্গে যোগ দেয়ার কথা অভিনয়শিল্পীদের। নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলস-সহ আরও যেসব শহরে সিনেমা-শো নির্মিত হয়, সবখানেই আন্দোলন করবেন তারা।
১৯৬০ সালের পর এই প্রথম অভিনয়শিল্পী এবং চিত্রনাট্যকাররা এক হয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। ডিজনি, ইউনিভার্সাল, সনি ও প্যারামাউন্টের মতো হলিউডের প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান এবং নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন ও অ্যাপলের মতো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে দুই সংগঠনের ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি শিল্পী-কুশলী নেমেছেন প্রতিবাদে।
চিত্রনাট্যকারদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে চালু হওয়া এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে স্টুডিওগুলো চিত্রনাট্য তৈরি করবে। যা তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। অন্যদিকে অভিনয়শিল্পীদের আশঙ্কা, একই প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের রেপ্লিকা বানিয়ে ফেলা হবে। তাই দুই সংগঠনের সদস্যরা চাইছেন, তাদের কর্ম এবং সম্মানী যেন নিশ্চিত থাকে।
এদিকে হলিউডের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ‘দ্য অ্যালায়েন্স অব মোশন পিকচার অ্যান্ড টেলিভিশন প্রডিউসার’-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের উত্থানের পর যে বিপর্যস্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটা মোকাবিলার জন্য যুক্তিসঙ্গত সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। তবে করোনা মহামারির কারণে সংকট আরও বিস্তৃত হয়েছে।
সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস