চোখে জল, মুখে প্রশংসা

ব্যক্তিগত জীবন তো রয়েছেই, এর বাইরে রাজনীতিতেও সরব সুবর্ণা মুস্তাফা। দায়িত্ব পালন করছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে। তবে এসবের আগে সবার কাছে তিনি যে পরিচয়ে পরিচিত, সেটা অভিনেত্রী। আর তাই শত ব্যস্ততার ভিড়েও শোবিজ জগতের বিভিন্ন আয়োজনে হাজির হন তিনি।
 
এই যেমন বুধবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর একটি প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখেছেন সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘১৯৭১ সেই সব দিন’। অভিনেত্রী হৃদি হক নির্মিত প্রথম সিনেমা এটি। গত ১৮ আগস্ট থেকে প্রেক্ষাগৃহে চলছে।
 
মুক্তিযুদ্ধ, প্রেম, পরিবার ইত্যাদিকে এই ছবিটিতে একই সূত্রে গেঁথেছেন হৃদি হক। আর সেই আবেগপূর্ণ নির্মাণ দেখে নিজেকে সামলাতে পারেননি সুবর্ণা। আপ্লুত মনে কেঁদে ফেলেন। হল থেকে বের হয়ে হৃদি হককে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছেন নন্দিত এই তারকা। এরপর তাৎক্ষণিক প্রশংসাও করেন।
 
এখানেই শেষ নয়, বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) প্রথম প্রহরে ছবিটি নিয়ে লম্বা রিভিউ দিয়েছেন সুবর্ণা মুস্তাফা। বললেন, “১৯৭১ সেই সব দিন’ দেখলাম। এটি মাত্র দুই মিনিটেই আমাকে ১৯৭১-এ ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। এই ছবির দুটো হিরো আছে; এক- ছবিটি, দুই- এর নির্মাতা হৃদি হক। সে গল্প বলার দুর্দান্ত কৌশল অবলম্বন করেছে।”

ছবির অভিনয় শিল্পীদের নিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফার পর্যবেক্ষণ এরকম, ‘অনেক বড় কাস্টিং। প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে সততার সঙ্গে সেরাটা দিয়েছেন। তাদের যা ছিল, সবটাই ঢেলে দিয়েছে। গান, আবহসংগীত, চিত্রগ্রহণ, সেট ডিজাইন, পোশাক, লোকেশন, প্রতিটি জিনিস গল্পের সঙ্গে মিশে গেছে। কোনও কিছুই অপ্রয়োজনীয় ছিল না।’

অনুভূতি প্রকাশে ‘কোথাও কেউ নেই’ খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি একপর্যায়ে অনেক বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম; আমি সত্যিকার অর্থেই কাঁদছিলাম এবং এটা একটি বড় ব্যাপার, কারণ আমি সচরাচর কাঁদি না। আমি মনে করি, ১৯৭১-এর সেই দুর্দশা, মানসিক বিপর্যয়ের কথাগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া খুব জরুরি। আর হৃদি হক সেটা সফলভাবেই করেছে।’

হৃদি হক ও সুবর্ণা মুস্তাফাএছাড়া নাম উল্লেখ করে ছবির অভিনয়শিল্পী ফেরদৌস, সানজীদা প্রীতি, মিলন, সজল, সাজু, লিটু আনাম, তারিনের প্রশংসা করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে হৃদি হককে পরামর্শ দিয়েছেন নিয়মিত অভিনয়টা চালিয়ে যেতে।
 
সবশেষে সুবর্ণা মুস্তাফার বার্তা, “১৯৭১ সেই সব দিন’ টিমকে সালাম। বেঁচে থাকলে ইনাম স্যার (হৃদি হকের বাবা ড. ইনামুল হক) নিশ্চয়ই অনেক খুশি হতেন। এই অসাধারণ অভিজ্ঞতার জন্য অনেক ধন্যবাদ হৃদি।”

বলা প্রয়োজন, এই সিনেমার মূল ভাবনা ড. ইনামুল হকের। তবে কন্যা হৃদির নির্মাণে ছবিটি দেখার আগে, ২০২১ সালেই মারা গেছেন তিনি। ছবিটি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকারি অনুদান পেয়েছিল।