প্রত্যন্ত একটি গ্রামে মা ও অসুস্থ দাদির সঙ্গে থাকে কাজল। মায়ের লিপস্টিক ঠোঁটে মাখতে ভালো লাগে ছেলেটির। তার মা কোহিনূর কাপড় সেলাইয়ের কাজ করে। শাশুড়ি ও সন্তানের যত্ন নেওয়া, রান্না করাসহ দিনভর পরিশ্রমের পর রাতে একাকীত্ব ভর করে তার ওপর। কাজলের বাবা জাভেদ অনেকদিন ধরে বাড়ি ফেরে না। গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে অন্যত্র বিয়ে করেছে সে। একদিন হঠাৎ এসে হাজির হয় জাভেদ। এরপর বদলে যেতে থাকে কাজলের জগত। গল্পটি বিপ্লব সরকার পরিচালিত ‘আগন্তুক’-এর। বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৮তম আসরে প্রশংসিত হয়েছে ছবিটি। নিউ কারেন্টস বিভাগে নির্বাচিত এই চলচ্চিত্র দেখে মন ভরেছে বিভিন্ন দেশের দর্শকদের।
সরকারি অনুদান পাওয়া ‘আগন্তুক’ বিপ্লব সরকার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। নিজের কাজ বুসানের মতো বড় মঞ্চে আসবে ভেবেছিলেন? প্রশ্নটা করার পর তিনি বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আড্ডায় বলেন, ‘স্বপ্ন তো থাকেই। আমিও স্বপ্ন দেখেছি একদিন বুসান কিংবা বড় উৎসবে পৌঁছাবো। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ শুরু করেছি। তবে আমাদের দেশে যে কাঠামোর মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র বানাতে হয় সেটা অনুকূল নয়। সব জায়গা থেকেই একটা সংগ্রাম করতে হয়। সবশেষে স্বপ্নটা বাস্তবায়ন হওয়ায় সেগুলো নিয়ে কষ্ট নেই।’
বুসানে ৮ অক্টোবর রাত ৮টায় সিজিভি সেন্টাম সিটি থ্রি’তে এবং ১১ অক্টোবর দুপুর ২টায় লটি সিনেমা সেন্টাম সিটি নাইনে ছবিটি দেখানো হয় ‘আগন্তুক’। এতে কাজল চরিত্রে ইহান রশিদ, কোহিনূরের ভূমিকায় সাহানা রহমান সুমি, মায়ের চরিত্রে ফেরদৌসী মজুমদার এবং জাভেদ রূপে অভিনয় করেছেন রতন দেব। এছাড়া আছেন নাঈমা তাসনিম, সালমান রহমান রাফসান, হাসিমুন নেসা, মাহমুদ আলম ও মতিউল আলম।
গত বছর গোয়ায় এনএফডিসির ফিল্ম বাজারের রিকমেন্ডস বিভাগে স্থান পায় ‘আগন্তুক’। এর অংশ হিসেবে প্রসাদ ল্যাব ডিআই পুরস্কার পায় এটি। ছবিটি প্রযোজনা করেছেন তাজুল হক, বিপ্লব সরকার ও রম্য রহিম চৌধুরী। চিত্রগ্রহণে মাজহারুল রাজু। ছবিটির দৈর্ঘ্য ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট।
গত ৪ অক্টোবর শুরু হয় বুসান চলচ্চিত্র উৎসব। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) এর পর্দা নামবে। এদিন সকালেই নিউ কারেন্টস বিভাগের বিজয়ীদের নাম জানানো হবে। এরপর সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে বিতরণ করা হবে পুরস্কার।