কণ্ঠ দিয়ে খ্যাতি। তবে এর বাইরে তার লেখার হাত, সুরের মননও বিস্তৃত। যেটার প্রমাণ অতীতে বহুবার মিলেছে। তিনি তানযীর তুহীন। দেশের ব্যান্ড মিউজিকের অন্যতম সফল কণ্ঠ। বর্তমানে নিজের গড়া ব্যান্ড ‘আভাস’ নিয়ে তার ধীর পায়ে পথচলা।
গানের তুহীনের নামের পাশে এবার আরেকটি পদবী আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হচ্ছে। লেখক। তার লেখা প্রথম বই প্রকাশিত হচ্ছে এবারের বই মেলায়। নাম ‘আহত কিছু গল্প’। হ্যাঁ, নামটি অনেক শ্রোতার কাছেই পরিচিত। এটি তুহীনের সৃষ্ট ও গাওয়া একটি গানের শিরোনাম।
তাই নামের অন্তরাল খোঁজা যাক আগে। কেন এই নাম? শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপে তানযীর তুহীন বললেন, ‘ওই গানের সঙ্গে বইটির বিশেষ কোনও সংযোগ নেই। আসলে ভালো কিছু তো আমরা হারিয়ে ফেলি। কিছু যদি ধরে রাখা যায় কিংবা কোনও ভাবে ফিরিয়ে আনা যায়; সেই চেষ্টা আরকি।’
অনুরোধে ঢেঁকি গিলেই কি শেষ? ভবিষ্যতে কি তবে তুহীনের শব্দ-বাক্য কাগজের পাতায় পাওয়া যাবে না? বিষয়টি নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া এরকম, ‘আসলে সব গল্প তো লেখা হয়ে গেছে। এখনকার কিংবা ভবিষ্যতের গল্পও মানুষ জানে। ফলে যা-ই লিখবেন না কেন, কিছু না কিছু মিলে যাবে। আর আমরা তো গানের মানুষ। এটার পেছনে সময় দিতে হয়, গানের ভাবনায় ডুবে থাকতে হয়। এর ফাঁকে বই লেখা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। এছাড়া লেখা নিয়ে আলাদাভাবে চিন্তা করা, ভাবাও জরুরি। তবু ভবিষ্যতে যদি নিজের ভেতর থেকে তাড়না আসে, মৌলিক বা সহমৌলিক মিলিয়ে হয়ত লেখা হবে।’
সম্প্রতি ‘আহত কিছু গল্প’ বইয়ের প্রি-অর্ডার শুরু হয়েছে অন্তর্জালে। পাঠকের সাড়া কেমন, সে বিষয়ে এখনও খোঁজ নেননি বলে জানালেন তুহীন। তার ভাষ্য, ‘আমি প্রকাশককে তাকে আগেই বলে রেখেছি, ছাপার খরচটা উঠলেই চলবে। যেহেতু আমার প্রথম বই, এর বেশি কিছু যেন প্রত্যাশা না করেন। প্রি-অর্ডারে কিছু পাঠক সাড়া দিচ্ছেন। আর আশা করি মেলায় অনেকে সরাসরি কিনতে আসবেন।’
যদিও প্রায় সবার জানা, তবু মনে করিয়ে দেওয়া, তানযীর তুহীনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। দেশসেরা বিদ্যাপীঠ বুয়েট থেকে পড়েছেন স্থাপত্যকলায়। এর পাশাপাশি সংগীতেও আলাদা পাঠ নিয়েছেন। ২০০০ সালের দিকে বন্ধুদের সঙ্গে গড়ে তোলেন ব্যান্ড ‘শিরোনামহীন’। ভোকাল হিসেবে এই ব্যান্ডের সঙ্গে তিনি বেশ কিছু অ্যালবাম ও শ্রোতানন্দিত গান উপহার দিয়েছেন। ২০১৭ সালে মতানৈক্যের কারণে ব্যান্ডটি থেকে সরে আসেন তুহীন। এরপর নিজেই গড়ে তোলেন ‘আভাস’।