নাট্যশিল্পী ও সাংবাদিকের বাড়িতে আগুন: ৬২ জনের প্রতিবাদলিপি

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে রঘুনাথপুর গ্রামের নির্মল হালদারের বাড়িতে ২২ মে মধ্যরাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। যে বাড়িটিতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সংস্কৃতির দুই সহোদর নাট্যকর্মী প্রশান্ত হালদার ও বিনোদন সাংবাদিক শ্রাবণী রাখী।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাড়ির প্রাচীরের মধ্যে থাকা খড়ের পালা, জ্বালানির স্তূপ ও গোয়ালঘর পুড়ে গেছে। পরিবারের সদস্যরা জানান, অগ্নিকাণ্ডে প্রায় চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ওই ঘটনায় নির্মল হালদারের বড় ছেলে নাট্যশিল্পী প্রশান্ত হালদার শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে প্রশান্ত ও তার বোন সাংবাদিক শ্রাবণী রাখী ঢাকা থেকে বাড়িতে ছুটে গেছেন।

এমন ঘটনার প্রতিবাদে দেশের ৬২ জন শিল্পী-সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মী মিলে একটি প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করেছেন গণমাধ্যমে। তারা এতে উল্লেখ করেন এভাবে-

আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছি, কতিপয় উগ্র মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় দুষ্কর্মে লিপ্ত হয়েছেন। এইসব অনাকাঙ্ক্ষিত ও প্রতিক্রিয়াশীল কর্মকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় দুষ্কৃতকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে। ফলে সামাজিক সম্প্রীতি ও শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে।

সম্প্রতি নাট্যশিল্পী, কবি ও কথাশিল্পী প্রশান্ত হালদার-এর ঝিনাইদহ, কালিগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে গত ২২ মে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার ঘটনাটি নানা রকম সন্দেহের অবকাশ তৈরি করেছে।পুড়ে ছাই বইআমরা জেনেছি, বেশ কিছুদিন থেকে অজ্ঞাতনামা কে বা কারা রাতের অন্ধকারে প্রশান্ত হালদারের বাড়ির জানালায় উস্কানিমূলকভাবে ৩/৪ বার মানুষের মল মাখিয়ে যায়, বাড়ির উঠানে হাড় হাড্ডি নিক্ষেপ করে। একাধিকবার তাদের ঘরের চালে ইট ও ঢিল নিক্ষেপ করে। প্রশান্ত হালদারের পরিবার এবং তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা ধারণা করছি, এই আগুন লাগার ঘটনা পূর্বাপর এইসব ঘটনার ধারাবাহিকতা। সামাজিক শান্তি বিনষ্টের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এই আগুন দেয়া হয়েছে। আগুনে বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার থেকেও এই পরিবার যে মানসিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে তা অমানবিক। পুরো পরিবার আতংকের মধ্যে দিনযাপন করছে।

প্রশান্ত হালদারের বাড়ি আগুনে পোড়ার ঘটনায় আমরা তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি। এর পেছনে কারা, কী উদ্দেশ্যে এটা করেছে, তাদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। আমরা দাবী করছি দ্রুত এই বিষয়ের সুষ্ঠু তদন্ত হতে হবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

বিবৃতিদাতাদের নাম ও পরিচয়

১/ আজাদ আবুল কালাম, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা
২/ মোহাম্মদ বারী, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা
৩/ অলক বসু, নাট্যকার ও নাট্যনির্দেশক
৪/ বাবুল বিশ্বাস, নাট্য গবেষক
৫/ আহমাদ মোস্তফা কামাল, কথাসাহিত্যিক
৬/ আলফ্রেড খোকন, কবি
৭/ ইউসুফ হাসান অর্ক, নাট্যশিক্ষক ও নাট্যনির্দেশক
৮/ আমিনুর রহমান মুকুল, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা
৯/ সাইদুর রহমান লিপন, নাট্যশিক্ষক ও নাট্যনির্দেশক
১০/ কামালউদ্দিন কবির, নাট্যশিক্ষক ও নাট্যনির্দেশক
১১/ ত্রপা মজুমদার, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেত্রী
১২/ আখতারুজ্জামান, নাট্যনির্দেশক ও সংগঠক
১৩/ অনন্ত হিরা, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা
১৪/ শহিদুল মামুন, নাট্যকার ও শিক্ষক
১৫/ শাহীনুর রহমান, চিত্রশিল্পী
১৬/ দিপ্তী চৌধুরী, উপস্থাপিকা ও আবৃত্তিশিল্পী
১৭/ নূনা আফরোজ, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেত্রী
১৮/ আইরিন পারভীন লোপা, নাট্যনির্দেশক ও সংগঠক
১৯/ হাসান শাহরিয়ার, সম্পাদক ও নাট্যকার
২০/ রাজীব নূর, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
২১/ মোহাম্মদ আলী হায়দার, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা
২২/ সামিনা লুৎফা নিত্রা, শিক্ষক ও নাট্যকার
২৩/ অপু শহীদ, নাট্যকার
২৪/ সাইফ সুমন, নাট্যনির্দেশক
২৫/ রেজা আরিফ, নাট্যনির্দেশক ও নাট্যশিক্ষক
২৬/ মাজহার সরকার, কবি
২৭/ সারা আফরীন, স্থপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা
২৮/ কামার আহমদ সাইমন, স্থপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা
২৯/ জুয়েইরিযাহ মউ, চলচ্চিত্র নির্মাতা
স্থানীয় প্রশাসনের পরিদর্শন৩০/ বাকার বকুল, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা
৩১/ মুক্তনীল, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা
৩২/ শামীম সাগর, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা
৩৩/ আনন জামান, নাট্যশিক্ষক ও নাট্যকার
৩৪/ ড. সুদীপ চক্রবর্তী, নাট্যশিক্ষক ও নাট্যনির্দেশক
৩৫/ আশিকুর রহমান লিয়ন, নাট্যশিক্ষক ও নাট্যনির্দেশক
৩৬/ রাখাল রাহা, কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষা গবেষক
৩৭/ পাভেল রহমান, সংস্কৃতিকর্মী
৩৮/ অপু মেহেদী, কবি ও নাট্যকার
৩৯/ কাজী রোকসানা রুমা, নাট্যশিল্পী
৪০/ স্বকৃত নোমান, কথাসাহিত্যিক
৪১/ মোজাফফর হোসেন, কথাসাহিত্যিক
৪২/ সুমন মজুমদার, কথাসাহিত্যিক
৪৩/ হামিম কামাল, কথাসাহিত্যিক
৪৪/ পলাশ মজুমদার, কথাসাহিত্যিক
৪৫/ এহসান মাহমুদ, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক
৪৬/ আর রাজী, শিক্ষক
৪৭/ সাঈদ বারী, প্রকাশক
৪৮/ সায়মা আলম, শিক্ষক
৪৯/ কামাল বায়েজীদ, অভিনেতা ও সংগঠক
৫০/ নাহিদ হাসান, লেখক ও সংগঠক
৫১/ শিমুল সালাহ্উদ্দিন, কবি ও সাংবাদিক
৫২/ প্রশান্ত অধিকারী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী
৫৩/ ঠান্ডু রায়হান, আলোক পরিকল্পক
৫৪/ সৈকত হাবীব, কবি ও প্রাবন্ধিক
৫৫/ মাশুক শাহী, কবি
৫৬/ নাজনীন চুমকী, নাট্যশিল্পী
৫৭/ অম্লান বিশ্বাস, আলোক পরিকল্পক
৫৮/ আলী মাহমুদ, অভিনেতা ও সংগঠক
৫৯/ রিসি দলাই, কবি
৬০/ ফৌজিয়া করিম অনু, নাট্যশিল্পী
৬১/ সাকিল সিদ্ধার্থ, নাট্যশিল্পী
৬২/ রেজানুর রহমান, নাট্যনির্দেশক ও কথাসাহিত্যিক

বিবৃতি প্রেরক থিয়েটার পত্রিকা ‘ক্ষ্যাপা’র নির্বাহী সম্পাদক অপু মেহেদী।