পরিবেশকর্মীরা জানিয়েছেন, বৃষ্টির অপ্রতুলতায় এবং তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে এই আগুন লাগতে পারে। তবে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণেই আগুন লাগেনি। ওই আগুনের সঙ্গে আরো একাধিক কারণ যুক্ত থাকতে পারে বলেও অভিযোগ উঠছে। এই ঘটনার পেছনে কাঠ-মাফিয়াদের সংযোগ আছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এই শুকনো, মরে যাওয়া বা পোড়া কাঠ নিলামে সস্তায় কিনে বাজারে বিক্রি করলে বেশ বড় অংকের লাভ করা যাবে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার পিছনে কাঠ-মাফিয়াদের আগ্রহ থাকতে পারে। আর কাঠ-মাফিয়াদের সঙ্গে ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র কোনও কোনও কর্মকর্তাও জড়িত থাকতে পারেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য নীতির তীব্র সমালোচনা করলেন ট্রাম্প
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে বলে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। সোমবার (২ মে) তিনি বলেছেন, ‘উত্তরাখণ্ডে লাগা ১২০০টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ৬০টিতে কমে এসেছে। সেগুলোকে আজই নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।’ প্রায় ছয় হাজার কর্মী আগুন নেভানোর কাজে নিযুক্ত রয়েছেন। এ কারণেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে বলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন।
প্রকাশ জাভড়েকর আরও বলেছেন, ‘পৌরি গাড়ওয়াল এলাকায় জঙ্গলে আগুন ধরানোর জন্য চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ধৃতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ নেওয়া হবে। জঙ্গল এলাকার এক ইঞ্চি জমিও জবরদখল করতে দেওয়া হবে না, বলেও তিনি উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডের দাবানলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা পৌরি গাড়ওয়াল। গত ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যের প্রায় ২৩শ’ হেক্টর বনভূমি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে পৌড়ি, নৈনিতাল, তেহেরি আর রুদ্রপ্রয়াগ।
আরও পড়ুন: মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি পেয়েছিলেন মোদি: আহমেদাবাদ মিরর
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেছেন, ঘন জঙ্গল রয়েছে এমন রাজ্যগুলিকে এ ধরনের অগ্নিকাণ্ড এড়ানোর জন্য সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের আদালতও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিমানে কানহাইয়ার গলা চেপে ধরলেন ‘মোদির সমর্থক’
উত্তরাখণ্ডের বেশ কয়েকটি জেলার জঙ্গল জুড়ে প্রায় ৩ মাস ধরে জ্বলা আগুন ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরপ্রদেশ, জম্মু কাশ্মীর ও হিমাচলপ্রদেশেও। এতে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭জন।
রাজ্যের দমকল বিভাগ কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় আগুন নেভাতে ব্যর্থ হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়। এর ফলে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার পাঠানো হয়। পাইনের বনে প্রায় ২৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এন-এইচ ১৭ হেলিকপ্টারের সাহায্যে প্রতিবার প্রায় তিনহাজার লিটার পানি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখতে কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
/এসএ/