যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সাদিক খানকে ‘অজ্ঞ’ বলে উল্লেখ করেছেন। ব্রিটেনের টেলিভিশন চ্যানেল আইটিভি-র গুড মর্নিং ব্রিটেন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি খুবই ক্ষুব্ধ, তিনি আমাকে চেনেন না। এগুলো খুবই রূঢ় বক্তব্য। আমার মনে হয়, তার অজ্ঞতার কারণেই তিনি এসব কথা বলেছেন।’
ট্রাম্প গত বছর প্যারিস হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান। সম্প্রতি টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লন্ডনের নবনির্বাচিত মুসলিম মেয়র সাদিক খান উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ধর্মবিশ্বাসের কারণে তিনি হয়তো যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করতে পারবেন না। মেয়র নির্বাচনে সাদিকের জয়ের পর তার ব্যাপারে ট্রাম্পের অবস্থান কী হবে তা জানতে চায় নিউ ইয়র্ক টাইমস। ট্রাম্প জানান, সাদিক খান সে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবেন না।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে ক্ষোভ জানিয়েছেন সাদিক খান। তার মতে, মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবটি সরাসরি তার কাছের মানুষদেরকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এ নিষেধাজ্ঞা থেকে তাকে (সাদিককে) বাদ রাখার কথা বলাটা কোনও উত্তর হতে পারে না বলেও ক্ষোভ জানান তিনি।
অন্য সব মুসলমানের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ব্যাপারে আপত্তি থাকলেও সাদিক খানের ক্ষেত্রে তা থাকবে না; ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি কেবল আমার প্রবেশাধিকারের বিষয় নয়, এটি আমার বন্ধু-স্বজন, পরিবার এবং বিশ্বে আমার মতো একই ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা মানুষদের প্রবেশাধিকারের বিষয়।’
ইসলাম নিয়ে ট্রাম্পের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করেন সাদিক। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘ট্রাম্পের এমন দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বের মুসলিমদেরকে একজোট হয়ে উগ্রপন্থীদের হাতের ইশারায় চলতে প্ররোচিত করে তুলতে পারে।’ সাদিক বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো যারা মনে করেন পশ্চিমা উদারবাদী মূল্যবোধের সঙ্গে মূলধারা ইসলাম অসামঞ্জস্যপূর্ণ, লন্ডন তাদের ভুল প্রতিপন্ন করেছে।
এরপর সাদিক খান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারানোর জন্য ডেমোক্র্যাট মনোনয়ন প্রত্যাশী হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থনের ঘোষণাও দিয়ে রেখেছেন।
এর আগে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন ট্রাম্পকে ‘মূর্খ, বিভেদকারী এবং ভুল’ বলেও উল্লেখ করেন। ওই সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প ব্রিটেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নেরও ইঙ্গিত দেন। ক্যামেরন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘সম্ভবত আমাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। আমি তার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। কিন্তু সম্ভবত তিনি সমস্যাটিকে বুঝতে চান না।’ সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।
আরও পড়ুন:
নিজের মোজায় লুকানো পিস্তলের গুলিতে আহত মার্কিন তরুণ
ব্রিটেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে ভিন্ন অবস্থান ট্রাম্পের
নারীদের ‘সম্ভোগের বস্তু’ ভাবতেন ট্রাম্প!
/এসএ/এএ/