সপ্তম বৈঠকে মোদি-ওবামা, স্বাক্ষর হতে পারে গোয়েন্দা চুক্তি

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ছয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ জুন) অনুষ্ঠিত হবে সপ্তম বৈঠক। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বৈঠকে প্রতিরক্ষা বিষয়ক আলোচনা প্রাধান্য পাবে। স্বাক্ষর হতে পারে সামরিক ও গোয়েন্দা চুক্তি।

বারাক ওবামা এবং নরেন্দ্র মোদি

তিন দিনের সফরে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন মোদি। গত দুই বছরে, তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন চারবার, দু’বার গেছেন ওয়াশিংটনে। আর ওবামা দু’বার ভারত সফর করেছেন। আর অসংখ্যবার ফোনে কথাও হয়েছে মোদি-ওবামার।

মোদি মঙ্গলবার ওবামার সঙ্গে ওয়ার্কিং লাঞ্চ করবেন বলে জানা গেছে। যার আয়োজক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওই বৈঠক সম্পর্কে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি অংশীদারিত্ব, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিষয়ক আলোচনা প্রাধান্য পাবে।

এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘মোদি-ওবামার মধ্যে দুটি দীর্ঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে একটি অনুষ্ঠিত ওভাল অফিসে। এরপর প্রেস ব্রিফিং হবে। তারপর তারা একসঙ্গে লাঞ্চ করতে করতে বৈঠক করবেন। এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।’

এবারের সফরে দুই দেশের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। সেই সঙ্গে আরেকটি সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে, যে চুক্তিতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ভারতীয় বন্দরে থামতে পারবে।  

এমন এক সময়ে এই সফরটি করছেন নরেন্দ্র মোদি, যখন দক্ষিণ চীন সাগরে দ্বীপ তৈরির ঘটনায় ওয়াশিংটন এবং বেইজিং-এর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে চীনের আধিপত্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় রাষ্ট্রই নিজেদের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়ন জরুরি বলে মনে করছে।  

ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে বারাক ওবামা এবং নরেন্দ্র মোদি

ধারণা করা হচ্ছে, নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ (এনএসজি)-তে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি এবারের বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচিত হবে। ওই গ্রুপে যুক্ত হতে পারলে ভারত পারমাণবিক পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয়ের অনুমতি লাভ করবে। তবে একদিকে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও কয়েকটি দেশ ভারতকে সমর্থন করছে, অন্যদিকে প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায় – চীন ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করবে এবং তাতে ভেটোও দিতে পারে।  

বুধবার পঞ্চম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্কিন কংগ্রেসের এক যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন নরেন্দ্র মোদি। এরপর গণ্যমান্য ব্যক্তি ও আইনপ্রণেতাদের জন্য এক সংবর্ধনায় তিনি যোগ দেবেন।

মোদি মার্কিন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করবেন বলেও জানা গেছে। তিনি ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।

এবারের সফরের আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সাংবাদিকদের বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। মোদি এমন একজন বিশ্বনেতা যার সঙ্গে ওবামার ঘনিষ্ট ও ফলপ্রসু কার্যকরী সম্পর্ক রয়েছে।’

সোমবার তিনি অরলিংটনে জাতীয় সমাধিতে যাবেন এবং সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তিনি সেখানে নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।

বারাক ওবামা ২০০৯ সালে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসেন, তখন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ভূমিকা থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর মোদির ওপর থেকে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

সূত্র: টাইম অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

আরও পড়ুন: 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ‘বাজে কথা’: ইসরায়েলি মুখপাত্র

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন হিলারি

যৌন সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় ১৯ নারীকে পুড়িয়ে হত্যা করল আইএস!

/এসএ/