দুই মাসের মধ্যে মসুল আইএসমুক্ত হবে: কুর্দি জেনারেল বারজানি

খারাপ আবহাওয়া এবং জটিল রাজনৈতিক সমীকরণের ফলে ইরাকি বাহিনীর মসুল শহরে পৌঁছাতে দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে, আর মসুলকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর কবল থেকে মুক্ত করতে দুই মাস সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন কুর্দি পেশমেরগা বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সিরওয়ান বারজানি।

মসুল অভিযানে কুর্দি বাহিনী

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল সিরওয়ান বারজানি বলেন, ‘আমার ধারণা, মসুল যুদ্ধে দুই মাস লেগে যাবে। তবে এখানে আবহাওয়া একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যা এই প্রক্রিয়াকে আরও বিলম্ব করাতে পারে।’

তিনি আরও জানান, সামরিক বাহিনীকে মসুল শহর পর্যন্ত পৌঁছাতেই দুই সপ্তাহ লেগে যাবে। তবে পেশমেরগা বাহিনী মসুল শহরে প্রবেশ করবে না। বাগদাদে স্বাক্ষরিক এক চুক্তি অনুযায়ী পেশমেরগা বাহিনী মসুল শহরের বাইরে অবস্থান করবে। আর শহরের ভেতরে লড়াই চালিয়ে যাবে ইরাকি সেনাবাহিনী, জাতীয় পুলিশ এবং সুন্নি মিলিশিয়া বাহিনী।

শিয়া মিলিশিয়াদের ক্ষেত্রেও একই রকম চুক্তি হয়েছে। তারাও শহরের ভেতর ঢুকবে না। ধর্মীয় বিভক্তির কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মসুলের পথে ইরাকি বাহিনী

এর আগে ইরাকি প্রেসিডেন্ট ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজির সঙ্গে ওয়াশিংটনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, আমরা সফল হবই। যদিও তা হতে যাচ্ছে এক কঠিন লড়াই।’

পেশমেরগা বাহিনী পূর্ব দিক থেকে নিনভেহ সমতল ভূমি দিয়ে এগোচ্ছে। গ্রামের পর গ্রাম আইএসমুক্ত করা হচ্ছে। আর ইরাকি ও শিয়া মিলিশিয়া বাহিনী বাগদাদ থেকে দক্ষিণ পাহাড়ি অঞ্চল দিয়ে মসুলের দিকে এগোচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জুনে আইএস জঙ্গিরা মসুল নগরী দখল করে নেয়। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই নগরীর জনসংখ্যা ২৫ লাখ।

মসুল শহরে আইএস

আইএস-এর হাত থেকে মসুলকে মুক্ত করার জন্য গত কয়েক মাস ধরে প্রস্তুতি চলছিল। সোমবার (১৭ অক্টোবর) ভোরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে আনুষ্ঠানিকভাবে মসুল পুনরুদ্ধার অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি। তিনি বলেন, ‘মসুলকে মুক্ত করার অভিযান শুরু হয়েছে। আজ আমি দায়েশের (আইএস) সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ থেকে আপনাদের মুক্ত করার অভিযান শুরু করার কথা ঘোষণা করছি। অভিযানে নেতৃত্ব দেবে সাহসী ইরাকি সেনাবাহিনী ও জাতীয় পুলিশ।’

মসুল অভিযানে ইরাকি সেনাবাহিনীর ১৮ হাজার সদস্য এবং কুর্দি পেশমেরগা বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য অংশ নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা সদস্যও তাদের সহযোগিতার জন্য রয়েছেন। এক মার্কিন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সোমবার মসুলের নির্দিষ্ট আইএস লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন বাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

/এসএ/