আরও ১০ হাজার সরকারি চাকরিজীবীকে বরখাস্ত করলেন এরদোয়ান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান চলতি বছরের জুলাই মাসের ক্যু প্রচেষ্টার কথিত ‘মাস্টারমাইন্ড’ ফেতুল্লাহ গুলেনের সঙ্গে সংযোগ থাকার অভিযোগে আরও ১০ হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছেন। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান

শনিবার রাতে শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ ১০ হাজার সরকারি চাকরিজীবীকে বরখাস্ত করার আদেশ জারি করেন এরদোয়ান।

একই সময়ে ১৫ টি সংবাদমাধ্যমকেও বন্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এসব সংবাদমাধ্যমের বেশিরভাগই কুর্দি অধ্যুষিত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলভিত্তিক।

এরদোয়ানের আদেশে এতোদিন ধরে চলে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর নির্বাচন প্রক্রিয়াও বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে হাই এডুকেশনাল বোর্ড কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীদের মধ্য থেকে প্রেসিডেন্ট নিজেই তা বাছাই করবেন।

এখন পর্যন্ত ওই ক্যু প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৩৭ হাজার জনেরও বেশি মানুষকে কারাবন্দি করা হয়েছে। এক লাখেরও বেশি সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত ও বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সেনা, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাসহ বেসামরিক প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সাংবাদিকও রয়েছেন। অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমের অন্তত ১৫০টি সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয় ক্যু প্রচেষ্টার পর।  

ফেতুল্লাহ গুলেন

উল্লেখ্য, ক্যু প্রচেষ্টার পর থেকেই তুরস্ক দাবি করে আসছে এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা-নির্বাসিত ইসলামি তাত্ত্বিক ফেতুল্লাহ গুলেনের সংযোগ রয়েছে। তবে গুলেন তা প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছেন। তুরস্কের পক্ষ থেকে মার্কিন সরকারের কাছে গুলেনকে তুরস্কে ফেরত পাঠানোর দাবিও করা হয়েছে।     

প্রসঙ্গত, ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় তুর্কি সেনাবাহিনীর একাংশ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশের শাসনভার নেওয়ার দাবি করে, যা দেশটির টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। মধ্যরাতে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দিয়ে তুরস্কের ডানপন্থী সরকার উচ্ছেদের দাবি করে দেশটির সেনাবাহিনীর একাংশ। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে’ সশস্ত্র বাহিনী তুরস্কের ক্ষমতা দখল করেছে। টেলিভিশনের পর্দায় পড়ে শোনানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, এখন ‘শান্তি পরিষদ’দেশ চালাবে এবং কারফিউ ও সামরিক আইন জারি থাকবে। একই সঙ্গে তুরস্কের বিদ্যমান বৈদেশিক সব সম্পর্ক বহাল থাকবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা প্রাধান্য পাবে। কারফিউর বিরোধিতা করে এরদোয়ানের সমর্থকরা রাস্তায় নেমে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

শেষ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর সব অংশের সমর্থন না থাকায় এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের তৎপরতায় জনগণ রাস্তায় নেমে এলে বিদ্রোহী সেনাদের উদ্যোগ ভেস্তে যায়।

সূত্র: রয়টার্স।

/এসএ/