নাৎসি স্যালুটে বিব্রত ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্পনাৎসি স্যালুটের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় উদযাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নব্য নাৎসীবাদীরা। দেশটির শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যকামী ‘অল রাইট’ গ্রুপের কাছ থেকে এমন  স্যালুট পেয়েছেন তিনি। নব্য নাৎসীবাদী এ গ্রুপটি শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য ছাড়াও ইসলামভীতির প্রসার এবং নারীবাদের বিরোধিতায় সরব। তবে গ্রুপটির এমন স্যালুট প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প। যদিও নির্বাচনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নব্য নাৎসিবাদীদের সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি। ট্রাম্পের পেছনে একযোগে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যকামী গ্রুপগুলো।

নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাদের নিন্দা জানাই। এটা আমি অস্বীকার করছি এবং এর নিন্দা করছি।’

অল রাইট গ্রুপকে সক্রিয় করার কোনও ইচ্ছা তার নেই বলেও জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প।

অ্যাডলফ হিটলারকে ‘হেইল হিটলার’ বলে অভিবাদন জানাতো সমর্থকরা। শনিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের বিজয়োৎসব পালনকালে যেন উঠে এলো এমনই এক চিত্র। অনুষ্ঠানে এক বক্তা ‘হেইল ট্রাম্প’ বলে জোরালো  আওয়াজ দেন।

প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, অল রাইট মুভমেন্টের একজন নেতা রিচার্ড স্পেন্সার এক সম্মেলনে কথা বলছেন। এতে তিনি বলেন, আমেরিকা সাদা মানুষদের জন্যে। এ সময় তিনি শ্বেতাঙ্গদের ‘সূর্যসন্তান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এ সময় তিনি যারা কখনও গ্রহ-উপগ্রহে পদচারণা করেনি তাদের সবচেয়ে ঘৃণ্য জীব হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

নাৎসি স্যালুটের আদলে যখন কিছু উপস্থিত দর্শক তাদের বাহু প্রসারিত করেন রিচার্ড স্পেন্সার তখন চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘হেইল ট্রাম্প, হেইল আওয়ার পিপল, হেইল ভিক্টরি!’

এদিকে মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেল মেরকেল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ট্রাম্পের জয় শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যকামীদের জন্য ত্রাণকর্তার মতো আবির্ভূত হতে পারে। ‘হেইল ট্রাম্প’ ভিডিওকে ‘বিভৎস ও ভয়ঙ্কর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য প্রশাসনে এরইমধ্যে নাম উঠেছে কট্টর ইসলামবিরোধীদের। এ নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ-আতঙ্ক কাজ করছে মুসলিম বিশ্বে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। এদের মধ্যে রয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য মুখ্য নীতিনির্ধারক (চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট) স্টিভ ব্যানন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। তাদের কট্টর ইসলামবিরোধিতার অতীত নজির থাকায় বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ইসলামের বিরুদ্ধে একটা দীর্ঘ যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে। স্বভাবতই এটা সহজে থামবে না।

স্টিভ ব্যাননের ‘জুডিও-ক্রিশ্চিয়ান ওয়েস্ট’ থেকে শুরু করে মুসলিমদের বিষয়ে মাইকেল ফ্লিনের আক্রমণাত্মক বক্তব্য এমন আতঙ্কের পেছনে কাজ করছে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুসলিমবিদ্বেষী টুইট করেন ফ্লিন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘মুসলিমদের নিয়ে আতঙ্কিত হওয়াটা যৌক্তিক।’ সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান।

/এমপি/