কাস্ত্রোর স্মরণসভা

লাতিন নেতৃত্বের ‘ভাই হারানোর বেদনা’, পশ্চিমা নেতাদের উপেক্ষা

রাউল কাস্ত্রোর সঙ্গে মাদুরোমার্কিন নেতৃত্বাধীন পুঁজিবাদী মুক্তবাজার অর্থনীতির বিপরীতে লাতিন আমেরিকা যে বিকল্প অর্থব্যবস্থা জারি করতে সক্ষম হয়েছে, তার নেপথ্যে ছিলেন কাস্ত্রো। ছিলেন প্রেরণা-সাহস আর সহায়তার উৎস হয়ে। লাতিন নেতাদের কাছে কাস্ত্রোর চলে যাওয়া তাই ‘ভাই হারানোর বেদনা’র সামিল।
হাভানার ঐতিহাসিক রেভ্যুলেশন স্কয়ারে লাতিন নেতারা ভাই কিংবা বন্ধুকে হারানোর বেদনার কথাই জানিয়েছেন। স্মরণ করেছেন বিগত স্মৃতি। কেবল লাতিন আমেরিকাই নয়, মতাদর্শিক বন্ধু আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ নেতাও যোগ দিয়েছেন ফিদেলের স্মরণ অনুষ্ঠানে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস, জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার মতো বিশ্বনেতারা এবং বিশ্বের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও ওই স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
তবে ভিন্ন মতাদর্শের পশ্চিমা নেতৃত্ব কাস্ত্রোর স্মরণসভায় যোগ দেননি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিশ্বনেতাদের রাজনৈতিক বিভাজন দেখা গেছে। ফিদেলের মতাদর্শের সঙ্গে সমিল থাকা বিশ্বনেতারা সরাসরি উপস্থিত হলেও এ স্মরণ অনুষ্ঠানে পশ্চিমা নেতারা তাদের প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।
স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কিউবায় পৌঁছানোর পর বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস বলেন, ‘কিউবা অত্যন্ত মর্মাহত একটি ক্ষণ পার করছে। আমার ভাইকে, বন্ধুকে হারিয়ে এখন যে কষ্টের মুহূর্তগুলো পার হচ্ছে, তাতে যোগ দিতে এসেছি আমি।’
জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট মুগাবে

সাম্রাজ্যবাদীদের দিকে ইঙ্গিত করে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেন, ‘তারা ফিদেল কিংবা কিউবার জনগণ কিংবা এ মহান জাতির স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা কোনও কিছুকেই জয় করতে পারেনি।’

ফিদেল কাস্ত্রোর অবদানের কথা স্মরণ করে মাদুরো বলেন, ‘তিনি এ পৃথিবীতে তার লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছেন। এতো পরিপূর্ণ এবং এতো উজ্জ্বল জীবন খুব কমই আছে। তিনি অপরাজেয়ই থেকে গেছেন।’ 

এককালের গেরিলা যোদ্ধা এবং জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট মুগাবে কিউবার স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং বিশ্বজুড়ে কিউবান ডাক্তারদের ভূমিকা স্মরণ করেন। কিউবানদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ফিদেল কেবল তোমাদের নেতা ছিলেন না। তিনি আমাদেরও নেতা। বিশ্বের সমস্ত বিপ্লবীর নেতা তিনি’। স্মরণসভায় কিউবার রাষ্ট্রীয় জনকল্যাণমূলক ভূমিকার কথা স্মরণ করেন জ্যাকব জুমা। হোয়াইট হাউস মঙ্গলবারই জানিয়ে দিয়েছিল, স্মরণসভায় কোনও প্রতিনিধি পাঠাবে না তারা। কিউবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত সেখানে যোগ দেবেন।
/এফইউ/বিএ/