ইউরোপোলের তালিকাভুক্ত ৩৫০০ সন্দেহভাজনের নাম রয়েছে পানামা পেপারসে

ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ইউরোপোলের সন্দেহভাজন তালিকাভুক্ত প্রায় সাড়ে তিন হাজার ব্যক্তি ও কোম্পানির নাম রয়েছে পানামা পেপারসে। ওইসব ব্যক্তি ও কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থপাচার ছাড়াও সন্ত্রাসবাদে মদদ, চোরাচালানি এবং সাইবার অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।  

ইউরোপোল

উল্লেখ্য, পানামাভিত্তিক বিশ্বখ্যাত গোপনীয়তা রক্ষাকারী আইনি প্রতিষ্ঠান মোস্যাক ফনসেকা। সেখান থেকেই চলতি বছরের এপ্রিলে ফাঁস হয়েছে ১১ মিলিয়ন নথিপত্র। ওই নথিপত্রগুলোকেই বলা হচ্ছে পানামা পেপারস।

ফাঁস হওয়া নথিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, কিভাবে গোপনীয়তার আড়ালে ল’ ফার্মটি বিশ্বব্যাপী অর্থপাচার, নিষেধাজ্ঞা এড়ানো এবং কর ফাঁকিতে সহযোগিতা করেছে। এতে আরও উঠে এসেছে, বিশ্বের সাবেক ও বর্তমান ৭২ জন রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানসহ বহু মানুষের নিজেদের দেশ থেকে অর্থ লোপাটের ভয়াবহ চিত্র।

ইউরোপোলের আর্থিক তদন্তকারী বিভাগের প্রধান সাইমন রিওন্ডেট ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের এক কমিটিকে বলেছেন, ‘মোদ্দা কথা হলো, আমরা দেখতে পাচ্ছি ফাঁস হওয়া পানামা পেপারসে নাম থাকা ওই কোম্পানিগুলো শুধু অর্থপাচার, বা শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার মতো অর্থনৈতিক অপরাধের সঙ্গেই জড়িত নয়, বরং সন্ত্রাসবাদ এবং রুশ সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের সঙ্গেও তাদের সংযোগ রয়েছে।’

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট কমিটির তদন্তের জন্য একটি স্মারকলিপি প্রস্তুত করা হয়, যেখানে দেখা যায় কিভাবে বিশ্বের অফশোর কোম্পানিগুলো শুল্ক ফাঁকি এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয়।

ওই স্মারকলিপি অনুযায়ী, ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব জার্নালিস্ট-এর প্রকাশিত পানামা পেপারসের সঙ্গে ইউরোপোল নিজেদের সংরক্ষিত সন্দেহভাজনদের তালিকা মিলিয়ে মোট তিন হাজার চারশ’ ৬৯টি কোম্পানি ও ব্যক্তির নাম পেয়েছে। যাদের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ করা হচ্ছে।

ওই তালিকায় এক হাজার সাতশ’ ২২টি নাম ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর নাগরিক ও কোম্পানির। তবে বেশিরভাগ নামই যুক্তরাজ্যের। তাদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া ৫১৬টি নাম পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর নাগরিক ও কোম্পানির, যাদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। ৩৮৮টি নামের বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২৬০টি নামের বিরুদ্ধে সিগারেট চোরাচালান এবং ১১৬টি নামের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

/এসএ/