মিসরে প্রভাবশালী নারী অধিকারকর্মী গ্রেফতার, মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ক্ষোভ

সোলাইমানমিসরের নারী অধিকারবিষয়ক প্রভাবশালী আইনজীবী আযা সোলাইমানকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। আগার মালিকানাধীন ফাউন্ডেশন ও একটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান খবরটি নিশ্চিত করেছে। সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, আযা সোলাইমানকে আটকের খবরে মিসরের মানবাধিকার সংগঠনগুলো ক্ষুব্ধ।

উল্লেখ্য, আযা সোলাইমান হলেন সেন্টার ফর ইজিপ্টিয়ান উইমেন’স লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স (সিইডব্লিউএলএ) এর প্রতিষ্ঠাতা। গত মাসে মিসরে যে ক’জন অধিকারকর্মী, আইনজীবী এবং সাংবাদিকের ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, তিনি তাদেরই একজন। গত সপ্তাহে সোলাইমান জানিয়েছিলেন, তাকে ১৯ নভেম্বর কায়রো বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর আগে তার ব্যক্তিগত এবং সংগঠনের মালামাল জব্দ করা হয়। আর বুধবার তার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ নারীবাদীকে কায়রো পুলিশ আটক করেছে।

সেন্টার ফর ইজিপ্টিয়ান উইমেন’স লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স টুইটারে জানায়, ‘ইনভেস্টিগেটিভ জজ আযা সোলাইমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।’

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সোলাইমানের বাড়িতে গিয়ে সেখান থেকে তাকে কায়রো পুলিশ স্টেশনে নিয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই টুইটে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ ব্যাপারে মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কোন অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি।

এদিকে সোলাইমানকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে নিন্দা জানিয়েছেন মিসরের মানবাধিকারকর্মীরা।

ইজিপ্টিয়ান কমিশন ফর রাইটস এন্ড ফ্রিডমস-এর কর্মী মোহাম্মদ লফটি বলেছেন, ‘সোলাইমানকে গ্রেফতারের ঘটনাটি মিসরের নাগরিক সমাজের ওপর দমন-পীড়নের চিত্রকেই উপস্থাপন করছে।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তিনিস কার্যালয়ের ডেপুটি ক্যাম্পেইন্স ডিরেক্টর নাজিয়া বোনাইম বলেন, ‘এ গ্রেফতারের ঘটনাটি স্বাধীনধারার মানবাধিকারকর্মীদের ওপর মিসরীয় কর্তৃপক্ষের পদ্ধতিগত নিপীড়নের দৃষ্টান্ত।’

নারী অধিকারকর্মী এবং গবেষক ডালিয়া আবদেল হামিদ বলেন ‘এ ঘটনা কেবল তার জন্যই নয়, গোটা নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকারকর্মীদের জন্য অপমানজনক।’

বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য বিদেশি তহবিল গ্রহণের অভিযোগে বেশ কিছু এনজিওকে দীর্ঘদিন ধরে তদন্তের আওতায় রেখেছে মিসর। এসব এনজিওর বেশিরভাগই অধিকার রক্ষার কাজ করে থাকে। ২০১৩ সালে বেশ কয়েকটি ফরাসি গ্রুপ বন্ধ করে দেওয়ার আদেশ দেয় মিসরের আদালত। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রবিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউজও রয়েছে। একইসময়ে ১৫ মার্কিনিসহ ৪৩ জন এনজিওকর্মীর বিরুদ্ধে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। অবশ্য, ওই ১৫ মার্কিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে মিসরের একটি আদালত পাঁচ মানবাধিকারকর্মী ও তিন এনজিওর সম্পদ জব্দের নির্দেশ দেয়।

/এফইউ/বিএ/