সিরিয়ায় দেশব্যাপী অস্ত্রবিরতিতে ‘সম্মত’ রাশিয়া-তুরস্ক

সিরিয়ায় গত পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধে নিহত হয়েছেন অন্তত আড়াই লাখ মানুষ।সিরিয়ায় দেশব্যাপী অস্ত্রবিরতি কার্যকরের ব্যাপারে একমত হয়েছে রাশিয়া-তুরস্ক। পরিকল্পনা অনুযায়ী আইএসের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো ছাড়া বাকি পক্ষগুলো এ অস্ত্রবিরতি কার্যকরে ভূমিকা রাখবে। তবে যেসব এলাকায় জাতিসংঘ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর লড়াই চলছে, সেগুলো অস্ত্রবিরতির আওতায় থাকবে। বুধবার নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে এমন খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি। একই রকমের খবর দিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক নিউজ। আনাদোলুর বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাও খবরটি জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুরস্কের একজন কর্মকর্তা জানান, সিরিয়ার যেসব স্থানে বিদ্রোহীরা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, সেসব স্থানে এ অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে। এ বিষয়ে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত রাশিয়া ও তুরস্কের কর্মকর্তাদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনার কথা রয়েছে।

প্রস্তাবিত এ অস্ত্রবিরতি সফল হলে রাশিয়া ও তুরস্কের নেতৃত্বে সামগ্রিক বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে। কাজাখস্তানের রাজধানীতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, সিরিয়ার সরকার ও বিরোধী পক্ষের প্রতিনিধিদের কাজাখাস্তানে একত্রিত করতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া ও তুরস্ক। আর দীর্ঘমেয়াদী এ সংঘাত নিরসনে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করতে কাজাখস্তান প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নুরসুলতান নাজারবায়েভ।

 

২০১১ সালের ১৫ মার্চ গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এমন ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী হচ্ছেন সিরিয়ার মানুষ।

এদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনী আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর নগরীর প্রান্তে অবস্থান করা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহেই শুরু হয়েছে নতুন অভিযান। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ওই জেলায় সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আতারেব জেলা ও তার নিকটবর্তী গ্রামের আকাশে যুদ্ধবিমানগুলোকে টহল দিতে দেখা গেছে। তবে ওই যুদ্ধ বিমানটি সিরীয় বাহিনীর ছিল, নাকি রুশ বাহিনীর তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে রাশিয়া বাশার আল-আসাদ সরকারের পক্ষে সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়ে আসছে।

জাতিসংঘের হিসাবে, ২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত আড়াই লাখ মানুষ। আর ঘরছাড়া হয়েছেন কমপক্ষে এক কোটিরও বেশি মানুষ।

/এমপি/