স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) মধ্যরাত থেকে কার্যকর হওয়া ওই অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস), আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জাবাথ ফাতেহ আল-শাম এবং কুর্দি ওয়াইপিজি বিদ্রোহীরা বাদে অন্যান্য সিরীয় সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন অংশ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এই যুদ্ধ বিরতির আওতায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারি বাহিনী ৬২ হাজার বিদ্রোহীর ওপর আর কোনও হামলা চালাবে না। অপরদিকে, বিদ্রোহীরাও সরকারি বাহিনী বা সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে কোনও হামলা চালাবে না।
সিরিয়ার বেশিরভাগ এলাকায় বুধবার থেকেই অস্ত্রববিরতি কার্যকর হয়। আর যদি তা পরবর্তীতেও কার্যকর থাকে, তাহলে এক মাসের মধ্যেই উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হবে শান্তি আলোচনা। আর অনুষ্ঠিত হবে কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, অস্ত্রবিরতির প্রথম কয়েক ঘণ্টায় কোনও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে পরে হামা প্রদেশে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাশিয়া আসাদের মিত্র হিসেবে ভূমিকা রেখে এলেও, তুরস্ক বরাবরই আসাদ-বিরোধী বিদ্রোহীদের মদদ দিয়ে এসেছে। কিন্তু চলতি বছরের জুলাইয়ে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তুরস্ক ওই সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাসিন ইসলামি তাত্ত্বিক ফেতুল্লাহ গুলেনকে দায়ী করে আসছে। আর মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতিতে দামেস্ক-আঙ্কারা-মস্কোর হিসাব-নিকাশেই পরিবর্তন আসে। আগে যেখানে আসাদের পতনের পর রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলতো তুর্কি সরকার, সেখানে এখন তারা আসাদকে নিয়েই সিরিয়া সংঘাতের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধান চাইছে।
২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে চার লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। তবে প্রকৃত নিহতের হিসাব এখনও নির্দিষ্ট করা সম্ভব হয়নি। গৃহযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ ঘরহারা হয়ে প্রাণ বাঁচাতে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স।
/এসএ/