জার্মানিতে হিটলারের ‘মাইন ক্যাম্ফ’: এক বছরে বিক্রি ৮৫ হাজার কপি

মাইন ক্যাম্ফ-এর মূল প্রচ্ছদএক বছর আগে জার্মানিতে প্রকাশিত হয়েছিল দেশটির নাৎসি শাসক অ্যাডলফ হিটলারের লেখা ‘মাইন ক্যাম্ফ’ বইটির এক বিশেষ সংস্করণ। এখন পর্যন্ত যা প্রায় ৮৫ হাজার কপি বিক্রি হয়েছে। মিউনিখের ইনস্টিটিউট অব কনটেম্পরারি হিস্টোরি (আইএফজেড) ‘মাইন ক্যাম্ফ’-এর টীকাযুক্ত ওই সংস্করণটি প্রকাশ করে গত জানুয়ারিতে।

প্রকাশক প্রফেসর আন্দ্রিয়াজ ওয়াইরশিং জানিয়েছেন, ওই সংস্করণের প্রায় ৮৫ হাজার কপি ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এই সংখ্যাটা আমাদের জন্য খুবই আশাব্যঞ্জক।’ আইএফজেড-এর পরিচালক আন্দ্রিয়াজ আরও জানান, চলতি মাসের শেষ নাগাদ ষষ্ঠতম প্রিন্টের কপি বাজারে আসবে।

আইএফজেড-এর সংস্করণে বইটির প্রচ্ছদে নাৎসি যুগের মতো হিটলারের ছবি নেই। নেই নাৎসি স্বস্তিকা চিহ্ন, যা জার্মানিতে নিষিদ্ধ। এই সংস্করণে যুক্ত করা হয়েছে বেশকিছু টীকা।

প্রকাশক আন্দ্রিয়াজ জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ-কে জানিয়েছেন, ‘আইএফজেড একটি সংক্ষেপিত ফরাসি সংস্করণ করারও পরিকল্পনা করছে। তবে সেখানে আমাদের দুই-তৃতীয়াংশ মন্তব্যই অনুবাদ করতে হবে।’

মাইন ক্যাম্ফ - আইএফজেড সংস্করণ

উল্লেখ্য, ‘মাইন ক্যাম্ফ’ বইটি প্রথম ১৯২৫ সালে, হিটলার ক্ষমতায় আসার আট বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান নাৎসি বাহিনী পরাজিত হওয়ার পর বইটিকে নিষিদ্ধ করা হয়। সেই সঙ্গে বইটির স্বত্ত্ব তুলে দেওয়া হয় বাভারিয়া রাজ্যের হাতে। কিন্তু জার্মান কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী, প্রকাশনার স্বত্ত্ব ৭০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকে।

৭০ বছর পার হওয়ার পর বাভারিয়া কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর না থাকায় বইটি পুনরায় প্রকাশের উদ্যোগ নেয় আইএফজেড কর্তৃপক্ষ। প্রথম পর্যায়ে তারা ৪ হাজার কপি প্রিন্ট করেছিলেন। তবে তা দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ায় পরবর্তীতে আরও বেশি সংখ্যায় বই প্রিন্ট করা হয়।

‘মাইন ক্যাম্ফ’-এ হিটলার তার বর্ণবাদী আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিলেন। ক্ষমতায় গিয়ে যা হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি বাহিনী কার্যকর করেছিল।

প্রফেসর আন্দ্রিয়াজ ওয়াইরশিং

বিভিন্ন মহল থেকে বইটি নতুন করে প্রকাশ করার সমালোচনা করা হয়। তা নাৎসিদের প্রতি সহানুভূতিশীলদের শক্তি যোগাবে বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে প্রফেসর আন্দ্রিয়াজ এসব সমালোচনার বিপরীতে বলেন, “বুদ্ধিমান শিক্ষকরা এই সংস্করণটি শ্রেণিকক্ষে ব্যবহার করতে পারেন। ‘সব দোষ কেবল হিটলারের।’ ১৯৫০-এর দশকের এমন ধারণা আজ পোষণ করাটা খুবই হাস্যকর।”  

সূত্র: বিবিসি।

/এসএ/