বায়ুদূষণের কারণে প্রায়ই ধোঁয়াশাচ্ছন্ন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে বেইজিংবাসীকে। ২০১৫ সালে শহরটিতে দূষণের মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত মাত্রার চেয়ে তা আট গুণ বেশি ছিল। ২০১৪ সাল থেকে দূষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে চীন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে। অনেকে দাবি করেছেন, দূষণকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের নজরদারি জোরালো করালে দূষণ ঠেকানো যেতে পারে। এই প্রেক্ষাপটেই পরিবেশ পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিলো বেইজিং।
শহরটির মেয়র সাই কি বলেন, ‘নতুন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রাস্তায় রাস্তায় টহল দেবে, নিয়ম ভঙ্গ করে কেউ খোলা জায়গায় বারবিকিউ করছে কিনা, আবর্জনা পোড়াচ্ছে কিনা তা দেখবে এবং নোংরা রাস্তা খুঁজে বের করবে।’
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে সাই কি আরও জানান, দেশটির সবশেষ কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করা হবে এবং চলতি বছর কয়লার ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানো হবে। বায়ুদূষণ ঠেকাতে ৫শটি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং তিন লাখ পুরনো যানবাহন তুলে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিস প্রজেক্টের'এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর ৫৫ লাখেরও বেশি মানুষকে অকালে প্রাণ হারাতে হচ্ছে। আর এসব প্রাণহানির বেশিরভাগই হচ্ছে ভারত ও চীনের মতো দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে নির্গত ক্ষুদ্র কণা, কল-কারখানা ও যানবাহনের কালো ধোঁয়া, কয়লাসহ বিভিন্ন ধরনের জ্বালানিকে বায়ু দূষণের জন্য দায়ী করা হয়েছে। তবে বায়ু দূষণের জন্য দায়ী মূল উপাদানটি দেশভেদে ভিন্ন হয়ে থাকতে পারে বলে জানান গবেষকরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অপুষ্টি, মুটিয়ে যাওয়া, মাদকাসক্তি এবং অনিরাপদ যৌন মিলনের চেয়েও বায়ু দূষণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। দূষিত বায়ুর শহরে বসবাসের কারণে হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন রোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্য এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেন গবেষকরা।
২০১৩ সালের তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনে বলা হয়,প্রতি বছর চীনে প্রায় ১৬ লাখ এবং ভারতে ১৩ লাখের কাছাকাছি মানুষ মারা যায়। চীনে বায়ু দূষণের মূল কারণ হিসেবে কয়লা পোড়ানোর কথা উল্লেখ করা হয়।
/এফইউ/