স্কটল্যান্ডের গির্জায় কোরআন পড়ায় বিতর্ক

গ্লাসগো শহরের সেইন্ট ম্যারি’স এপিসকোপাল ক্যাথেড্রালগত সপ্তাহে এপিফানি বা যিশুর আবির্ভাব উদযাপন উপলক্ষ্যে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরের সেইন্ট ম্যারি’স এপিসকোপাল ক্যাথেড্রালে এক অতিথি বক্তা কোরআন-এর ১৯ নম্বর সূরা (সূরা মরিয়াম) থেকে একাংশ পড়ে শোনান। আর এতেই শুরু হয় বিতর্ক। অনলাইনে আক্রমণাত্মক হুমকি দেওয়া হয় চার্চকে। যার তদন্ত করছে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে চার্চ প্রিমাস-এর ডেভিড চিলিংওর্থ বলেন, ‘যে সিদ্ধান্তের জন্য এমন অবস্থার সৃষ্টি হলো, তা সেইন্ট ম্যারি’স ক্যাথেড্রালের প্রভোস্ট এবং ক্যাথেড্রাল সম্প্রদায়ই নিয়েছে। তবে এমন ভয়াবহ আক্রমণের জন্য স্কটিশ এপিসকোপাল চার্চ গভীরভাবে আহত বোধ করছে।’   

তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাথেড্রাল সম্প্রদায়কে যেভাবে অপদস্থ করা হলো, তার জন্য আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। ক্যাথেড্রালে যা হয়েছে, তার জন্য স্কটিশ এপিসকোপাল চার্চ আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক উন্নয়নের সঙ্গে জড়িতদের ডেকে পাঠাবে।’

গত সপ্তাহে ওই এপিফানি উদযাপন অনুষ্ঠানে গ্লাসগোর মুসলিম সম্প্রদায়কেও গির্জায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ১৯ বছর বয়সী ব্রিটিশ মুসলিম শিক্ষার্থী মদিনা জাভেদ কোরআন-এর সূরা মরিয়াম-এ বর্ণিত যিশুর জন্ম সম্পর্কিত বক্তব্য পাঠ করেন। মুসলিমরা যিশুকে ‘নবী’ হিসেবে শ্রদ্ধা করলেও তাকে ‘ঈশ্বরের পুত্র’ বলে স্বীকৃতি দেন না। আর কোরআন-এর ওই বক্তব্যও জাভেদ পড়ে শোনান।

এ প্রসঙ্গে ক্যাথেড্রালের প্রভোস্ট কেলভিন হোল্ডওর্থ জানান, দুই পৃথক বিশ্বাসের বোঝাপড়ার জন্যই তা পড়ে শোনানো হয়।

তবে রোচেস্টারের বিশপ মাইকেল নাজির আলী গির্জার এমন আচরণকে ‘অসুস্থ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘খ্রিস্টানরা তাদের সহ-নাগরিকদের বিশ্বাস সম্পর্কে জানতে নিজেরা কোরআন বা তার অনুবাদ পড়তে পারেন। কিন্তু গির্জায় জনসমক্ষে প্রার্থনার সময়ে তা পড়ে শোনানো একেবারেই ভিন্ন কথা।’

পুলিশ কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ক্যাথেড্রাল সম্প্রদায়কে দেওয়া হুমকির বিষয়ে তদন্ত করছে।

পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘আমরা এখন শুধু এটুকুই বলতে পারি যে, গ্লাসগোর সেইন্ট ম্যারি’স এপিসকোপাল ক্যাথেড্রালের বিরুদ্ধে যেসব বক্তব্য সামনে এসেছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্কটল্যান্ড পুলিশ কোনও রকম ঘৃণাকে সহ্য করবে না। আর কেউ যেন নিজেকে আতঙ্কিত বা বিচ্ছিন্ন মনে না করেন, সেজন্য সকল সম্প্রদায়ের একসঙ্গে কাজ করাকে আমরা উৎসাহিত করি।’  

/এসএ/