ইস্তানবুল হামলার প্রধান সন্দেহভাজন আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন!

আবদুলকাদির মাশারিপভতুরস্কের ইস্তানবুলের নাইটক্লাবে হামলা চালানো সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর হয়ে এ হামলা চালানো হয়েছিল। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার হওয়া আব্দুল কাদির মাশারিপভ নামের ওই ব্যক্তি খোদ এসব স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে দাবি করেছেন ইস্তানবুলের গভর্নর।

উল্লেখ্য, ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে ইস্তানবুলের বেসিকতাস এলাকার জনপ্রিয় রেইনা নাইট ক্লাবে জঙ্গি হামলা হয়। ওই ভয়াবহ হামলায় নিহত হন ৩৯ জন। আহত হন অন্তত ৬৯ জন। হতাহতদের মধ্যে বিদেশি পর্যটকও ছিলেন। ধারণা করা হয়, হামলাকারীরা ভাড়া করা ট্যাক্সিতে করে ওই নাইট ক্লাবে পৌঁছায়। এ হামলার প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে সোমবার আবদুলকাদির মাশারিপভকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজন আবদুলকাদির উজবেকিস্তানের নাগরিক। তাকে ইস্তানবুলের ইসেনিউর্ট এলাকা থেকে আটক করা হয়।

গ্রেফতার আবদুলকাদিরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ইস্তানবুলের গভর্নর ভাসিপ সাহিন জানান, সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে এবং তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলে গেছে। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে আবদুলকাদির তুরস্কে প্রবেশ করেছিলেন বলে মনে করার কথা জানিয়েছেন সাহিন।

গভর্নর সাহিন বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে আইএস-এর হয়ে আবদুলকাদির মাশারিপভ এ হামলা চালিয়েছে। সে আফগানস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল এবং চারটি ভাষায় কথা বলতে পারে। সে একজন ভালোভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি।’

তুর্কি সংবাদপত্র হুরিয়েত জানিয়েছে, আবদুলকাদিরকে জিজ্ঞাসাবাদের আগে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। ওই সন্দেহভাজনকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সদস্য উল্লেখ করে সংবাদপত্রটি আরও জানিয়েছে, ২০১৬ সালের শুরুর দিকে এই উজবেক নাগরিক তুরস্কে পৌঁছায়। তখন তার সম্ভাব্য নাম ছিল ইবু মুহাম্মদ হোরাসানি। এই ব্যক্তি মধ্য তুরস্কের কোনিয়া শহরে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় থাকতো। নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে হুরিয়েত জানাচ্ছে, গত ১৫ ডিসেম্বর ইস্তানবুল পৌঁছায় আবদুলকাদির।

উল্লেখ্য, জঙ্গি হামলা চালানোর সময় ওই ক্লাবে প্রায় ৭০০ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। হামলাকারীদের একজন সান্তা ক্লজের বেশে ছিল। হামলার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশের অতিরিক্ত গাড়ি এবং বেশকিছু অ্যাম্বুলেন্স। হামলার পর আহত অবস্থায় অন্তত ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়।

ওই  হামলার দায় স্বীকার করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) একটি বিবৃতি দিয়েছিল। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তুরস্কে ক্রুশের সুরক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে আইএস পরিচালিত পবিত্র অভিযানের ধারাবাহিকতায় ইস্তানবুল হামলা চালানো হয়েছে। খিলাফতের একজন বীর সৈনিক এমন এক সুবিখ্যাত নাইট ক্লাবে হামলা চালিয়েছে, যেখানে খ্রিস্টানরা ইসলামবিরোধী ছুটির দিন কাটায়।

/এফইউ/