অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণের নিন্দা জাতিসংঘের

স্টেফান দুজারিকফিলিস্তিনে অধিকৃত পশ্চিমতীরের ইসরায়েলি বসতিতে নতুন বাড়ি নির্মাণের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) নতুন আড়াই হাজার বাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতোনিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগদর লিবারম্যানের দাবি, ‘আবাসনের প্রয়োজন বিবেচনা করে’ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নতুন বাড়ি স্থাপনের ঘোষণা দেওয়ার পর নেতানিয়াহু আরও বসতি স্থাপনেরও ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বসতি নির্মাণ করছি এবং তা করেই যাব।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক ওই ইসরায়েলি ঘোষণার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি একে ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের অন্তরায়’ বলে উল্লেখ করেছেন।

অধিকৃত ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি

দুজারিক বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বাইরে কোনও বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে যে কোনও একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত শান্তি প্রক্রিয়ার বাধা সৃষ্টি করতে পারে, এ সম্পর্কে মহাসচিব অবগত রয়েছেন। দুই পক্ষের মধ্যে একটি গঠনমূলক আলোচনার প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল, দুটি রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব।’ 

নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বগ্রহণের পর দ্বিতীয়বারের মতো অধিকৃত পশ্চিমতীরে বসতি বিস্তারের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।

এদিকে, ইসরায়েলি সরকারের এ পরিকল্পনা শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করবে উল্লেখ করে ক্ষোভ জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। 

নেতানিয়াহুর সঙ্গে লিবারম্যান

প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-এর নির্বাহী কমিটির সদস্য হানান আশরাউই বলেন, ‘আরও একবার ইসরায়েলি সরকার প্রমাণ করলো যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার চেয়ে ভূমি চুরি এবং উপনিবেশবাদের ক্ষেত্রে তারা বদ্ধপরিকর।’

উল্লেখ্য, ১৯৯০ এর দশকের শুরু থেকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় শান্তি আলোচনা হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা চায় পশ্চিম তীরে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে এর রাজধানী বানাতে। ১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের অবিভাজ্য রাজধানী বলে দাবি করে থাকে ইসরায়েল। অবশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পূর্ব জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৬৭ সালের পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে প্রায় ২০০ বসতি স্থাপন করেছে ইসরায়েল। পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে স্থাপিত এসব বসতিতে প্রায় ৬ লাখ ইসরায়েলি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এ বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হলেও ইসরায়েল তা মানতে নারাজ।

সূত্র: বিবিসি। 

/এসএ/