ঘটনার বিবরণে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট জানায়, ২০১৫ সালের ৫ ডিসেম্বর লন্ডনের লেইটনস্টোন রেল স্টেশনে সেন্ট্রাল লাইনের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় জিমারম্যানকে হামলা করেন মুহিদ্দিন মীর।
তার ওপর ক্রমাগত হামলাকারীর ঘুষি, লাথি চলতে থাকে। জিমারম্যান জানান, তিনি মেঝেতে পড়ে যাওয়ার পর মাথায় লাথি দিতে থাকে মীর। এতে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় হাতে থাকা ছুরি দিয়ে জিমারম্যানকে জবাই করার চেষ্টা করে মীর। ছুরি দিয়ে ভয় দেখানোয় তাকে সাহায্যের জন্য অন্য যাত্রীরাও এগিয়ে আসতে পারেনি।
জিমারম্যান বলেন, “মীর ‘সিরীয় ভাইদের জন্য এই হামলা’ এবং ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চিৎকার করায় পুলিশ প্রথমে তার সঙ্গে জঙ্গিবাদ ও আইএস-এর সংযোগ থাকার ধারণা করে। কিন্তু মীর বেশ কয়েক বছর ধরে মানসিক রোগে আক্রান্ত। আর তাই পরে পুলিশ এর সঙ্গে জঙ্গিবাদের কোনও সংযোগও পায়নি।” মীরের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অভিযোগ আনা হয়নি, বরং হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয় এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
জিমারম্যান আরও জানান, মীরের ছুরিকাঘাতে তার গালে ১৯টি সেলাই দেওয়া হয়। তবে তিনদিন পরেই তিনি আবার মঞ্চে গান গাইতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, এই হামলাটি জঙ্গি হামলা ছিল না। ছিল এক মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তির আক্রমণ। মীরের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। তার সিজোফ্র্যানিয়া রোগের ইতিহাস রয়েছে। আর এজন্যই পুলিশ তার বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অভিযোগ আনেনি, যা পুরোপুরি যথার্থ।’
হোয়াইট হাউসের বক্তব্যের সঙ্গেও তীব্র দ্বিমত রয়েছে জিমারম্যানের। তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনাটিকে বৃহৎ আকারে প্রকাশ করে জঙ্গিবাদ বলে চালানোর কোনও মানে হয় না। এতে আইএস ও জঙ্গিবাদই লাভবান হবে।’
সম্প্রতি হোয়াইট হাউস দাবি করে, বেশিরভাগ জঙ্গি হামলার ঘটনাই প্রকাশ করে না সংবাদমাধ্যম, বা করলেও, সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে কাভার করা হয় না। আর এমন ৭৮টি ঘটনার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে তারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৭ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে পরবর্তী চারমাসের জন্য সব ধরনের শরণার্থী কার্যক্রম বন্ধ করেন। সেই সঙ্গে পরবর্তী তিন মাসের জন্য সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের (ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইয়েমেন) নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পরে সিয়াটলের এক বিচারক ট্রাম্পের ওই নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের আদেশ দেন। ট্রাম্প প্রশাসন ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলেও বৃহস্পতিবার সান-ফ্রান্সিসকোভিত্তিক তিন বিচারকের প্যানেল তা খারিজ করেন।
আপিল আদালতের পর এবার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছে মার্কিন বিচার বিভাগ। তবে সুপ্রিম কোর্টে না গিয়েও ট্রাম্প নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছেন বলে জানিয়েছেন।
/এসএ/বিএ/