পলিটিকোর খবর অনুযায়ী, শুক্রবার ছিল হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসারের এক সংবাদ সম্মেলন। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ‘কিউ’ ও ‘এ’ সেশনের মতো ব্রিফিংয়ের চেয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন ছিল অপেক্ষাকৃত কম আনুষ্ঠানিক। সেই সংবাদ সম্মেলনে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি সিএনএন, নিউ ইয়র্ক টাইমস, পলিটিকো, লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস ও বাজফিডের প্রতিবেদককে। যারা ঢুকতে পেরেছেন, ছবি তোলার বা ভিডিও করারও অনুমতি পাননি তারা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে রীতিমতো ‘তুলোধুনা’ করা হয় শীর্ষ সংবাদমাধ্যমগুলোকে।
অবশ্য রয়টার্স, ব্লুমবার্গ ও সিবিএসের মতো আরও ১০টি প্রতিষ্ঠানে বিনা-বাধায় সংবাদ সংগ্রহ করতে পেরেছে। তবে ঠিক কী কারণে হোয়াইট হাউজ শীর্ষ মাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে ওই ব্যবস্থা নিলেন, তা খোলাসা করেননি প্রেস সেক্রেটারি। শন স্পাইসার বলেন, “আমরা সঠিকভাবে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাব দিতে পারছি কিনা সেটাই আমাদের কাজ। আমরা আপনাদের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত করতে চাই; তাই বলে এই নয় যে প্রতিবারই ক্যামেরার সামনে সব বলতে হবে।” পরে এক বিবৃতিতে ওই সংবাদমাধ্যমগুলোকে বাধা দেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, যেহেতু হোয়াইট হাউসের পুল রয়েছে, সেহেতু তারা অন্যদের প্রতিনিধিত্ব করবে এবং আমাদের কাছ থেকে সব তথ্য পাবে।
সাধারণত একটি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ও একটি প্রিন্ট আউটলেট থেকে একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে পুল গঠিত হয়। এই পুলের অংশ হিসেবে এনবিসি, এবিসি, সিবিএস ও ফক্স নিউজকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও গ্যাগেলে বাধা দেওয়া হয় সিএনএনকে।ঠিক একইভাবে নিউইয়র্ক টাইমসকে বাধা দেওয়া হলেও সেই ব্রিফিংয়ে ঢুকতে দেওয়া হয় ব্রেইবার্ট নিউজ, দ্য ওয়াশিংটন টাইমস এবং ওয়ান আমেরিকা নিউজ নেটওয়ার্ক নামে সংবাদমাধ্যম গুলোকে।
ক্যামেরা বন্ধ রেখে সংবাদ সম্মেলনের এই ধারণা নতুন কিছু নয়। তবে হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনে সব সংবাদ মাধ্যমের প্রবেশ এবং প্রশ্ন করার রীতি অনেক পুরনো। হোয়াইট হাউজের এমন ‘কাণ্ডে’ সুবিধাবঞ্চিত কয়েকটি সংবাদ সংস্থা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এদিকে সিপিএসি কনফারেন্সে মিডিয়াকে মার্কিন জনগণের শত্রু আখ্যা দেন ট্রাম্প। অতীতের ধারাবাহিকতায় তিনি বলেন, ‘আপনাদের জানাতে চাই যে সংবাদের নামে চলমান গুজবের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি।’ ট্রাম্প বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি মিডিয়াকে গণশত্রু আখ্যা দিয়েছিলাম। আজও আমি একই কথা বলছি।’ গত সপ্তাহে তিনি টুইটারে লিখেছিলেন: ‘গুজব সৃষ্টিকারী মিডিয়াগুলো (নিউ ইয়র্ক টাইমস, এনবিসিনিউজ, সিবিএস, সিএনএন) শুধু আমার শত্রু নয়। তারা সমগ্র মার্কিন জনতার শত্রু।’
নিউ ইয়র্ক টাইমের নির্বাহী সম্পাদক ডিন ব্যাকেট বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটতে দেখিনি।’ নিউ ইয়র্ক টাইমস ছাড়া বাকিরাও এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার প্রশ্নে হোয়াইট হাউজ করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনও সামিল হয়েছে প্রতিবাদে।
/বিএ/