জন্ম কেন্টে
খালিদ মাসুদের জন্ম কেন্টের ডার্টফোর্ডে। আড্রিয়ান ইলমস নামে বেড়ে ওঠা খালিদ মাসুদ সম্প্রতি ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস-এ বসবাস করছিলেন।
ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তর
সহিংস অপরাধের অভিযোগে কারাগারে থাকার সময় খালিদ ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর তখনই আড্রিয়ান ইলমস নামটি পরিবর্তন করে খালিদ মাসুদ করা হয়। কারাগারে থাকার সময়ই খালিদ ইসলামী উগ্রপন্থায় আগ্রহী হন বলে মনে করা হচ্ছে।
খালিদের বিরুদ্ধে অপরাধের পূর্ব নজির ছিল
স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড জানিয়েছে, মাসুদের বিরুদ্ধে অপরাধের পূর্ব নজির আছে। একবার মাসুদ এক ব্যক্তির মুখে এমন করে ছুরি চালিয়েছিল যে সে ব্যক্তিকে পরে কসমেটিক সার্জারি করাতে হয়েছে। অন্যের ক্ষতিসাধনমূলক একটি অপরাধের অভিযোগে প্রথমবারের মতো ১৯৮৩ সালের নভেম্বরে দোষী সাব্যস্ত হন মাসুদ। আর ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে ছুরি বহনের অভিযোগে সর্বশেষ দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। তবে সন্ত্রাসী কোনও হামলার অভিযোগে মাসুদ কখনও দোষী সাব্যস্ত হননি। মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, খালিদ মাসুদ অনেক ছদ্মনামেও পরিচিত। তবে মেট্রোপলিটন পুলিশ কিংবা সাসেক্স পুলিশের কেউই মাসুদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ এবং তার কারাদণ্ড নিয়ে বিস্তারিত জানায়নি।
সাবেক প্রতিবেশীদের চোখে মাসুদ
৫২ বছর বয়সী খালিদ মাসুদকে লন্ডনের হামলাকারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে শুনে সাবেক প্রতিবেশীরা হতাশ হয়েছেন। ইন্ডিপেনডেন্টকে তারা বলেন, ‘তিনি (খালিদ) খুব ভালো মানুষ ছিলেন, যার স্বাভাবিক একটি পরিবার ছিল'। তার অল্পবয়সী সন্তান রয়েছে বলেও জানা গেছে। তবে তার সন্তান সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য আছে। পরিচিতজনদের কেউ কেউ বলেছেন, মাসুদের তিনটি সন্তান, আবার কেউ বলেছেন মাসুদের সন্তান সংখ্যা ৪।
খালিদের বিরুদ্ধে আগেও তদন্ত হয়েছে
এর আগে বৃহস্পতিবার হাউস অব কমন্সে দেওয়া বক্তব্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেন, হামলাকারী ব্যক্তি একজন ব্রিটিশ নাগরিক। পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ তাকে চিনতো এবং কয়েক বছর আগে সহিংস উগ্রপন্থার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্তও করা হয়েছিল।
এমপিদের উদ্দেশে থেরেসা মে বলেন, ‘গতকাল সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রকে নীরব করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু একটি বার্তা দিতে আজ আমরা স্বাভাবিকভাবে একত্রিত হয়েছি। যেভাবে আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম একত্রিত হয়েছিলেন এবং যা পরবর্তী প্রজন্ম বজায় রাখবে। বার্তাটি হলো: আমরা ভীত নই এবং সন্ত্রাসবাদ দিয়ে আমাদেরকে সংকল্প থেকে সরিয়ে আনা যাবে না।’
উল্লেখ্য, বুধবার ওয়েস্টমিনস্টার সেতুর ওপর দিয়ে পার্লামেন্টের দিকে আসার পথে সজোরে গাড়ি চালিয়ে তা পথচারীদের ওপর উঠিয়ে দেন খালিদ মাসুদ। সেসময় বেশ কয়েকজন হতাহত হন। পরে গাড়িটি পার্লামেন্টের নিরাপত্তাবেষ্টনীতে গিয়ে আঘাত হানে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, হামলাকারী ৮ ইঞ্চি ছুরি নিয়ে পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন। নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিলে এক পুলিশ সদস্যের ওপর ছুরিকাঘাত করেন তিনি। তখন পুলিশ হামলাকারীকে গুলি করে তাকে রুখে দেয়। গুলিতে নিহত হয় হামলাকারী। সব মিলিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা ৫ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
/এফইউ/