পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ বাঁচিয়ে যা করার করবো: মমতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর প্রশ্নে এখনও নিজের কঠোর অবস্থানে অটল রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মমতা বলেছেন,পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার পর কিছু করার থাকলে বাংলাদেশের জন্য তিনি তা করবেন। তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে ভারতের কেন্দ্র সরকার তার সঙ্গে কোনও আলোচনা করছে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন পশ্চিমবঙ্গের  মুখ্যমন্ত্রী।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে (৭-১০ এপ্রিল) ভারতে সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে তিস্তা চুক্তিতে সায় দেবেন কিনা জানতে চাইলে মমতা এবিপি আনন্দকে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য যা করার করবো,তবে বাংলার স্বার্থ বাঁচিয়ে।’
ভারতের কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘রাজ্যের স্বার্থে আমি যা করার তাই করবো। ওরা আমাদের না জানিয়ে নিজেরা ইচ্ছামতো করে, রাজ্যকে ওরা জানানোর প্রয়োজন মনে করে না। আমার সঙ্গে ওই বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে মমতা বলেন, ‘আমার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত  সম্পর্ক খুব ভালো, রাজনৈতিক সম্পর্কও ভালো। যদি ভালো না হতো তাহলে আমরা কিভাবে ছিট মহল চুক্তি  করে দিলাম, যা ৬৬ বছরে হয়নি।’ 

মমতা আরও বলেন, ‘আমি যেহেতু এই জায়গাটাতে আছি মানুষতো আমাকেই ধরবে। আমি মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি না, বেঈমানি করতে পারতে পারি না বাংলার স্বার্থে। কিন্তু যেখানে আমরা পারবো এবং দু’দেশেরই ভালো হবে সেটা আমি করবো।’

কেন্দ্রীয় সরকারকে ইঙ্গিত করে মমতা বলেন, ‘তোমরা সবকিছু প্রস্তুত করে যদি তাতে স্ট্যাম্প মারতে বলো তাহলে আমি দুঃখিত। আমাকে রাজ্যের স্বার্থ দেখতে হবে, আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। রাজ্যকে বাঁচিয়ে আমি বাংলাদেশকে যতটা সাহায্য করা যায় তা করবো।’

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে অমীমাংসিত বিষয়ের উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি। প্রায় চার দশক ধরে তিস্তা পানি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে বাংলাদেশ। ২০১১ সালে ভারত এ চুক্তি করতে সম্মত হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের চরম বিরোধিতার কারণে এ চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। এরমধ্যে একাধিকবার ভারত সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আশ্বাস দেওয়ার পরও এ চুক্তি কবে হতে পারে, তা বলতে পারছে না ভারত। এ চুক্তির মূল বৈশিষ্ট্য হলো- বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন ৫৪ নদীর ক্ষেত্রে তিস্তা চুক্তির খসড়া ব্যবহার করা যাবে।

সূত্র: এবিপি আনন্দ
/এফইউ/এএ/ এপিএইচ/