সোমবার (৩ এপ্রিল) বিকালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের দু’টি মেট্রো স্টেশনের মাঝামাঝি থাকা এক ট্রেনে ওই হামলা হয়। মঙ্গলবার সবশেষ ১৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। হামলায় আহত মানুষের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়েছে।
কিরগিজস্থান এবং রাশিয়া উভয় দেশের কর্তৃপক্ষের বরাত দিয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, হামলায় মধ্য এশীয় দেশ কিরগিজস্তান বংশোদ্ভূত এক তরুণ জড়িত বলে দাবি করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। ওই তরুণ পরে রুশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছে করে দাবি করেন তারা। ঘটনা তদন্তের এক পর্যায়ে হামলাকারীকে আকবরজন জলিলভ নামে সংবাদমাধ্যমে পরিচয় করিয়ে দেয় রুশ কর্তৃপক্ষ।
ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে রাষ্ট্রীয় রুশ সম্প্রচারমাধ্যম আরটি’র (রাশিয়া টিভি) বরাত দিয়ে বলা হয়, আকবরজন বেশ কয়েক বছর ধরে সেন্ট পিটার্সবার্গে বসবাস করে আসছেন। প্রথমে বাবার সঙ্গে গাড়ি মেরামতের কাজ করতেন তিনি। পরে সুশি (এক প্রকার জাপানি খাবার) বার-এ কাজ করতেন আকবরজন। তার মা-বাবা পরে কিরগিজস্তানে ফিরে যান।
রুশ তদন্তকারীরা সন্দেহভাজন হামলাকারী আকবরজনকে ইসলামী জঙ্গিবাদে আগ্রহী বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে। এদিকে আকবরজনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কর্মকাণ্ডে তাকে ইসলামী উগ্রপন্থা ও বক্সিং-এর প্রতি আগ্রহী দেখা গেছে বলে দাবি করেছে ফক্স নিউজ।
গোয়েন্দা ও রাষ্ট্রীয় রুশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট পিটার্সবার্গে যাওয়ার আগে জলিলভের উজবেক জাতিগোষ্ঠীর পরিবার কিরগিজস্তানের শহর অশে থাকতেন। ২০১০ সালে ওই এলাকায় কিরগিজ ও সংখ্যালঘু উজবেকদের মধ্যে সংঘাতে ৪০০-রও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। আহত হয় কয়েক হাজার মানুষ।
সহকর্মী ও প্রতিবেশীদের চোখে জলিলভ খুব চমৎকার ও বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ। সুশি বারের সাবেক এক সহকর্মীর বয়ানকে উদ্ধৃত করে ফক্স নিউজ জানায়, জলিলভ সংঘাতপূর্ণ মানুষ ছিলেন না।
মেট্রো স্টেশনের সিকিউরিটি ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা গেছে জলিলভ যখন সাবওয়ে স্টেশনে প্রবেশ করছেন তখন তাকে শান্ত দেখাচ্ছিল। তার চোখে চশমা ছিল, পশমওয়ালা কলারবিশিষ্ট পোশাক পরা ছিলেন তিনি। মাথায় ছিল নীল উলের হ্যাট। আর সঙ্গে ছিল ব্যাকপ্যাক।
এ হামলার সঙ্গে কারা জড়িত থাকতে পারে, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত কোনও তথ্য প্রকাশিত হয়নি। কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। এই ঘটনায় শোক ও নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা।
/এফইউ/বিএ/