সিরিয়ার ‘বিষাক্ত গ্যাস হামলা’য় বিদ্রোহীদের দুষছে রাশিয়া

nonameসিরিয়ায় বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস হামলায় বিদ্রোহীদের দায়ী করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার দাবি, বিদ্রোহীরাই ওই রাসায়নিক গ্যাস মজুত করে রেখেছিল। সিরীয় বিমান হামলায় সেই গুদাম আক্রান্ত হলে বিস্ফোরণ ঘটে।

সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল ইদলিবে ওই সম্ভাব্য রাসায়নিক গ্যাস হামলা সংঘটিত হয়। আন্তর্জাতিক আইন এবং যুদ্ধনীতি অস্বীকার করে আবারও সিরিয়ায় রাসায়নিক গ্যাস ব্যবহারের আলামত মেলে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১৩ সালের আগস্টে সারিন গ্যাস হামলার অভিযোগ ওঠার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ রাসায়নিক হামলা। আসাদবিরোধী বিদ্রোহীরা এই হামলায় সরকারী বাহিনী ও রাশিয়াকে দুষলেও এই দাবি অস্বীকার করেছে সিরীয় সেনাসূত্র ও রুশ কর্তৃপক্ষ। হামলায় সবশেষ ৭২ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইদলিব।  ফ্রি সিরিয়ান আর্মি এবং সাবেক আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট নুসরা ফ্রন্টসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী এখানে আধিপত্য করছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সরকার আলেপ্পো শহর ও দামেস্কের আশেপাশের এলাকা দখল করে নিলে হাজার হাজার বিদ্রোহী যোদ্ধা ইদলিবে আশ্রয় নেয়। আর সেকারণে ইদলিবের জনসংখ্যা বেশ বেড়ে গেছে। 

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিরীয় যুদ্ধবিমান থেকে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিবের খান শেইখুন শহরে হামলা চালানো হয়েছিল। সে সময়  বিদ্রোহীদের বিষাক্ত রাসায়নিক মজুদ করা একটি গুদাম আক্রান্ত হলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর আগে সেনা সূত্রকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, এ ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী। আর মঙ্গলবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীও দাবি করেছেন, রাশিয়া ইদলিবে কোনও বিমান হামলা চালায়নি।

’যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ওই হামলায় অন্তত ৭২ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্য এরেছে ২০টি শিশু। ওই ঘটনার পর ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আক্রান্তরা শ্বাস নিতে পারছেন না, মুর্ছা যাচ্ছেন এবং তাদের মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, আক্রান্তরা যখন চিকিৎসা নিচ্ছিলেন, তখনও সেখানে বিমান হামলা চালানো হয়। কয়েকজন আক্রান্তকে তুরস্কে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসারত এক নারী জানিয়েছেন, ‘আমরা বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়েছি। আমরা দাঁড়াতেও পারছি না। আমার মাথা ঘোরাচ্ছে, দুর্বল লাগছে। আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। শ্বাস নিতে পারছি না।’

মেডিক্যাল সূত্রকে উদ্ধৃত করে সিরিয়ান অবজারভেটরি জানিয়েছে, হামলার কারণে অনেকের শ্বাসরুদ্ধ হয়, কেউ কেউ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, কারও কারও আবার মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়ে আসে। ওই মেডিক্যাল সূত্র জানিয়েছে, এটি রাসায়নিক গ্যাস হামলা ছিল বলে আলামত মিলেছে।

/এসএ/বিএ/