গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন ১৯ বছরের ভিপিন ইয়াদভ, ৩০ বছরের রভিন্দ্র ইয়াদভ এবং ৪৪ বছরের কালুরাম। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের ভিডিও দেখে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এরাই এ মামলার মূল আসামী।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০০ জনের বিরুদ্ধে হলেও মাত্র তিনজনকে গ্রেফতারের ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের প্রতিবেশী ও স্বজনরা। তবে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের খোঁজে তার বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।
৩ এপ্রিল ২০১৭ সোমবার রাতে রাজস্থানের একদল স্বঘোষিত গো-রক্ষকের গণপিটুনিতে হরিয়ানার নূহ জেলার বাসিন্দা পেহলু খান নিহত হন। রাজস্থান থেকে ট্রাকে করে গরু কিনে ফেরার পথে তিনি ও তার সহযোগীরা আক্রান্ত হন। শনিবার রাতে ওই হামলার ঘটনায় আহত চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ভারতের রাজ্যসভায় এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিরোধী দল কংগ্রেস। দলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা রাজস্থানের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির মর্মান্তিক ঘটনা। যখন সরকার দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে মারমুখী জনতাকে রাস্তায় ছেড়ে দেয়, তখন এ ধরনের বিশাল ট্র্যাজেডি স্বাভাবিক। আশা করছি সরকার এ ধরনের নিষ্ঠুর এবং বিবেকহীন হামলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। সব শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ভারতীয়কে এমন অন্ধ বর্বরতার নিন্দা করা উচিত।’
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভি বলেন, আমরা গো-রক্ষার নামে এ ধরনের ঘটনা সমর্থন করি না। কিন্তু যেভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করা হচ্ছে বাস্তবে এ রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি খুব স্পর্শকাতর হওয়ায় এমন কোনও বার্তা যাওয়া উচিত নয়; যেন মনে হয় আমরা গো-হত্যাকে সমর্থন করি।
মুখতার আব্বাস নাকভি’র বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন বিরোধী নেতা গোলাম নবী আজাদ। তিনি বলেন, ‘আমার খুব দুঃখ হচ্ছে যে, দেখা যাচ্ছে মন্ত্রী কোনও খবরই রাখেন না। দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি নিউইয়র্ক টাইমসেও বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রী তা জানেন না।’
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের মজলিশ-ই ইত্তেহাদুল মুসলেমিন প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দাদরিতে মুহাম্মদ আখলাক হত্যা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত গরু রক্ষার নামে অন্তত ছয়জন মুসলিমকে খুন করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, দেশে আইনের শাসন চলবে নাকি গো-রক্ষদের শাসন চলবে? পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে এই গো-রক্ষকদের যোগসাজশ রয়েছে। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, পার্স টুডে।
/এমপি/