ট্রাম্পের সিরীয় যুদ্ধের সামরিক জবাব দেবে না রাশিয়া!

মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসিরিয়ার হোমস প্রদেশের আল-শায়রাত বিমানঘাঁটিতে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর জবাবে পাল্টা সামরিক আক্রমণ না করার কথা জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটির সরকারি সংবাদপত্র রসিসকায়া গ্যাজেটায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, রুশ পার্লামেন্ট ডুমার ডেপুটি স্পিকার পিওতর তলস্তয় অধিবেশন চলাকালে এসব কথা বলেন।

তলস্তয় বলেন, ‘আমরা কিভাবে প্রতি-আক্রমণ করতে পারি? অবশ্যই আমরা সামরিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে পারি না। আমাদের সামরিক বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও আমরা ইসকাদার দিয়ে হামলা চালাতে পারি না। তবে আমাদের শক্তি সেখানেই সীমিত নয়। আমাদের শক্তি রয়েছে ঘটনার যৌক্তিকতা বোঝার মাঝে।’

ওই সরকারি ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, তলস্তয় সব পার্লামেন্ট সদস্যকে ‘শান্তি বজায় রেখে আন্তর্জাতিক আইন ও বিচারের ভিত্তিতে যৌক্তিক’ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।   

মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার রাতে (সিরিয়ার স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে) ভূমধ্যসাগরে অবস্থান করা যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস পোর্টার এবং ইউএসএস রস থেকে আসাদ সরকার নিয়ন্ত্রিত আল-শায়রাত বিমানঘাঁটিতে ৫৯টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। হামলায় ঘাঁটিতে রাখা যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল ইদলিবে বিমান থেকে চালানো রাসায়নিক গ্যাস হামলার জবাবেই মার্কিন বাহিনী ওই হামলা চালিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘সিরিয়ার চালানো রাসায়নিক হামলার জবাবে আমি সামরিক স্থাপনায় ওই হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছি। এই মারাত্মক রাসায়নিক অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’

এদিকে, রাশিয়ান ফেডারেশন কাউন্সিলের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির প্রধান ভিক্টর অজেরভ বলেন, রাশিয়া প্রথমে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠকের দাবি জানাবে। এ কর্মকাণ্ড জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মার্কিন আগ্রাসন বলেই বিবেচিত হবে।’

রাশিয়ার পার্লামেন্টের প্রতিরক্ষা কমিটি জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ওয়াশিংটন-মস্কো সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে। আর এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক সংঘাত বাড়তে পারে।

উল্লেখ্য, ইদলিবে ওই রাসায়নিক গ্যাস হামলায় ৮৬ জন নিহত হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১৩ সালের আগস্টে সারিন গ্যাস হামলার অভিযোগ ওঠার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ রাসায়নিক হামলা। আসাদবিরোধী বিদ্রোহীরা এই হামলায় সরকারী বাহিনী ও রাশিয়াকে দুষলেও এই দাবি অস্বীকার করেছে সিরীয় সেনাসূত্র ও রুশ কর্তৃপক্ষ। হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে তোপের মুখে পড়ে রাশিয়া। ওই হামলায় সিরিয়ার বিদ্রোহীদের দায়ী করে রাশিয়া। মস্কোর দাবি, বিদ্রোহীরা ওই রাসায়নিক গ্যাস মজুত করে রেখেছিল। সিরীয় বিমান হামলায় সেই গুদাম আক্রান্ত হলে বিস্ফোরণ ঘটে। তবে রাশিয়ার এমন দাবি জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করে নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্য দেশগুলো। তারা আসাদকে থামাতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানায়।

/এসএ/