আরকানসাসে ১২ বছরে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

লেডেল লিযুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস অঙ্গরাজ্যে ১২ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনও অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ওই অভিযুক্তের নাম লেডেল লি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডে স্থগিতাদেশের তৃতীয় আবেদন খারিজ হওয়ার পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৫৬ মিনিটে লির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ১৯৯৩ সালে ডেব্রা রিসিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর ২০ বছর ধরে লি মৃত্যুদণ্ডের সাজা মাথায় নিয়ে কারাগারে বন্দি ছিলেন।

তবে সম্প্রতি বিবিসি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি মৃত্যুদণ্ডের সাজা নিয়ে বেঁচে থাকাকে ‘জীবন্ত দুঃস্বপ্ন’ বলে উল্লেখ করেছেন।   

চলতি মাসে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষাক্ত ইনজেকশন মিডাজোলামের সরবরাহের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আরকানসাস কর্তৃপক্ষ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আট অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরিকল্পনা করে। মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের প্রথম ঘটনা বুধবার সন্ধ্যায় সামনে আসে। অভিযুক্ত স্টাসি জনসন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে ডিএনএ পরীক্ষার দাবি জানালে বিচারক তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করেন। বৃহ্স্পতিবার স্টাসি জনসনের ফাঁসি কার্যকরের কথা ছিল।

একই দিন কিছু সময় পর আরেকজন বিচারক ফাঁসি কার্যকরের বিষাক্ত ইনজেকশন সরবরাহ নিষিদ্ধ করায় সাত আসামির ফাঁসি কার্যকর স্থগিত করেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আরকানসাস কর্তৃপক্ষ ভিন্ন কোনও বিষাক্ত ইনজেকশন ব্যবহার করার ওপর আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ১৯টিতে মৃতুদণ্ড বাতিল হলেও ৩১টিতে কার্যকর রয়েছে। ইলেকট্রিক চেয়ার বা বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমেই সাধারণত তা কার্যকর করা হয়। ১১ দিনের মধ্যে কোনও একটি অঙ্গরাজ্যে আটজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং মৃত্যুদণ্ডবিরোধী মানুষেরা রিপাবলিকান গভর্নরের এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেন। এক লাখ ৫৭ হাজার স্বাক্ষরসহ দাবিনামাও পেশ করা হয় গভর্নরের কাছে। যে বিষাক্ত ইনজেকশনের প্রয়োগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরিকল্পনা করা হয়, সেই মিডাজোলামের প্রস্তুতকারক ম্যাককেসন কর্পোরেশনও আরকানসাস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে অভিযোগ দায়ের করে জানায়, হত্যার উদ্দেশ্য গোপন করে এই ড্রাগ কিনেছে আরকানসাস প্রশাসন, যা কোম্পানির ভাবমূর্তির ক্ষতি করছে। পরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি হয়।

/এসএ/